বর্ধমান শহরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস। পর্যটনস্থল হিসেবেও বেশ পরিচিত এই জনপদ। কার্জন গেট, গোলাপবাগ, ১০৮ শিব মন্দির, সর্বমঙ্গলা মন্দির- আরও কত দেখার জায়গা রয়েছে বর্ধমানে। বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানার স্বদও অনেকেরই খুব প্রিয়।বর্ধমানের সেই ঐতিহ্যের মুকুটে কি আরও একটা পালক জুড়তে চলেছে? কারণ সোশ্য়াল মিডিয়ায় অনেকেই দাবি করেছেন যে, এবার নাকি বর্ধমানে মেট্রো রেল চলবে। এই দাবির সঙ্গে মেট্রো প্রজেক্টের একটা ছবিও ভাইরাল হয়েছে। ছবিটি পোস্ট করে ফেসবুকে একজন লিখেছেন, \"প্রস্তাবিত বর্ধমান মেট্রো রেল\"। অনেকে তো রুটের বিবরণ-সহ প্রজেক্ট শুরু ও শেষের দিনক্ষণও ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। পোস্টে লেখা হয়েছে, \"প্রস্তাবিত বর্ধমান মেট্রো রেল প্রজেক্ট| আমাদের বর্ধমান শহরের মধ্য দিয়ে খুব শীঘ্রই মেট্রো রেল প্রকল্প শুরু হওয়ার আসন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে, মোট দুটি লাইনের প্ল্যান করা হয়েছে। প্রথম লাইন আলিশা বাস স্ট্যান্ড থেকে বর্ধমান স্টেশন পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় লাইন বর্ধমান স্টেশন থেকে নবাবহাট বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত। প্রকল্প শুরুর আনুমানিক সাল: ২০২৫/২০২৭ , শেষ হওয়ার আনুমানিক সাল: ২০৩৩\" (পোস্টের বানান অপরিবর্তিত)যদিও ইন্ডিয়া টুডে তদন্ত করে দেখেছে যে, ভাইরাল দাবিটি পুরোপুরি মিথ্যে এবং স্কেচটিও ভুয়ো।কীভাবে এগলো অনুসন্ধান?সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৪ সালে কলকাতা চালু হয়েছিল ভারতের প্রথম মেট্রো পরিষেবা। এসপ্ল্যানেড থেকে নেতাজি ভবন পর্যন্ত প্রথম পরিষেবা শুরু হয়েছিল। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের আওতায় সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত পরিষেবা শুরু হয় এবং ওই বছরেরই অক্টোবরে সালে তা বাড়িয়ে ফুলবাগান পর্যন্ত করা হয়। এরপর ২০২১ সালে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো চালু হয়। এরপর কলকাতা মেট্রোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এখন পর্যন্ত নতুন কোনও মেট্রো প্রকল্পের আপডেট নেই। মেট্রো রেল ও ভারতীয় রেলের অফিসিয়াল ফেসবুক হ্যান্ডেলেও আমরা এই ধরনের কোনও আপডেট দেখতে পাইনি। দুই বিভাগের এক্স হ্যান্ডেলেও এমন কোনও আপডেট দেখা যায়নি।এরপর ইন্ডিয়া টুডের তরফে সরাসরি কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান যে, ফেসবুকে ভাইরাল দাবিটি মিথ্যে। বর্ধমানে মেট্রো রেলের কোনও প্রজেক্টের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রজেক্টের যে ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে সেটাও ভুয়ো।সুতরাং এখন প্রমাণিত যে, ভাইরাল দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যে।