ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন অধীনস্থ গাজার মধ্যে শুরু হয়েছে প্রবল যুদ্ধ। হামাস নামের সন্ত্রাসী সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজা থেকে বিগত কয়েকদিনে ইজরায়েলে হামলার পর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইজরায়েল। আর তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে দুই পক্ষের হাজারের বেশি মানুষের।
এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো বেশ ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, সেনার পোশাকে মুখোশ পরে দুজন কয়েকজন ব্যক্তিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে। যাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে তাদের প্রত্যেকেই হাতেই রয়েছে হাতকড়া।
ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, যাদের গাড়ি থেকে নামানো হচ্ছে তারা ইজরায়েলের সামরিক বিভাগের সব শীর্ষ কর্তা। ভিডিয়োটির সঙ্গে লেখা হয়েছে, "গাড়ি থেকে যাদেরকে নামানো হচ্ছে তারা সাধারণ কেউ নয়। তারা ইসরায়েলের মতো রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার, জেনারেল এবং নানান ডিফেন্স গ্রুপের প্রধান।"
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই দাবিটি সত্যি নয়। ভিডিয়োটির সঙ্গে ইজরায়েল বা প্যালেস্তাইন যুদ্ধের কোনও সম্পর্ক নেই। এই ভিডিয়োটি আজারবাইজানের।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
সবার প্রথম ভাইরাল ভিডিয়োটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে আমরা তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন ভাইরাল ভিডিয়োতে থাকা ওই একই ব্যক্তির ছবি আমরা দেখতে পাই আজারবাইজানের একটি খবরের ওয়েবসাইটে।
ওই তিন ব্যক্তির ছবি-সহ এই অক্টোবরের ৫ তারিখ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে লেখা হয় যে, এই ব্যক্তিরা আজারবাইজানের কারাবাখ এলাকায় অবৈধ অস্ত্র মামলায় জড়িত এবং দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করে।
ভাইরাল ভিডিয়োটির একদম প্রথমে যে ব্যক্তিকে গাড়ি থেকে নামতে দেখা যাচ্ছে, তার ওই হুবহু একই ছবি আমরা দেখতে পাই আজারবাইজানের খবরের ওয়েবসাইটে। সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, ধৃত এই তিন ব্যক্তির নাম গুকাসিয়ান আরকাদি আরশাভিরি, সাহাকিয়ান বাকো সাহাকি এবং ইশখানিয়ান ডেভিট রুবেনি।
খবর অনুসারে, এই তিন ব্যক্তি আজারবাইজানের কারাবাখ অঞ্চলে সশস্ত্র সংগঠন তৈরি করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যুক্ত ছিল, যে কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, প্যালেস্তাইন ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় গত ৭ অক্টোবর থেকে। এবং এই ছবি ও খবর প্রকাশ পায় ৫ অক্টোবর। যা থেকে কার্যত পরিষ্কার হয়ে যায় যে এই ভিডিয়োটি কোনও ভাবেই এই যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়া সম্ভব না।
এই একই ভিডিয়োটি আমরা আজারবাইজানের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ডিটিএক্সের অফিসিয়াল চ্যানেলেও দেখতে পাই যা ৫ অক্টোবর আপলোড করা হয়েছিল। এই ভিডিয়োর ক্যাপশনে লেখা হয়, যে ব্যক্তিরা কারাবাখে সশস্ত্র গোষ্ঠী পরিচালনা করছিল তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর থেকেই আর বুঝতে বাকি থাকে না যে আজারবাইজানের একটি অসম্পর্কিত ভিডিয়ো পুরোপুরি মিথ্যা দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে ফেসবুকে।
গাড়ি থেকে আটক করে যাদের নামানো হচ্ছে তারা ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার, জেনারেল এবং নানান ডিফেন্স গ্রুপের প্রধান।
প্যালেস্তাইন-ইজরায়েল যুদ্ধের সঙ্গে এই ভিডিয়োর কোনও সম্পর্ক নেই। এটি গত ৫ অক্টোবর, আজারবাইজানের ভিডিয়ো যেখানে সন্ত্রাসী সংগঠন চালানোর অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।