বন্যার জেরে মর্মান্তিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের ফেনী-সহ একাধিক পূর্বাঞ্চলে। ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের বন্যা বিপর্যস্ত এলাকায় কয়েক লক্ষ মানুষকে আশ্রয় নিতে হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।
এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি সাদা-কালো ভিডিও। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি ছোট্ট শিশু গলা জলে দাঁড়িয়ে সাহায্যের জন্য হাত তুলছে। ভিডিওটি শেয়ার করে তা চলমান বন্যার দৃশ্য বলে দাবি করা হচ্ছে।
অসংখ্য নেটিজেন ভিডিওটি শেয়ার করে ফেসবুকে লিখেছেন, "বলার মতো কোন ভাষা নাই। ছেলেটা কে একা পাওয়া গেছে সাথে কেউ ছিলো না, যখন তাকে উদ্ধার করা হয়। ছেলেটা যে কোন একটা জিনিসের উপর বসে ছিলো। একা একা হাত নাড়াচ্ছে পানি উপর।"
একই দাবি-সহ বেশ কিছু পোস্ট এখানে, এখানে ও এখানে দেখা যাবে।
ইন্ডিয়া টুজে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভিডিওটি আসল নয়, এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা তৈরি।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
ভাইরাল ভিডিওটিকে ভালভাবে লক্ষ্য করলে তাতে কিছু অসঙ্গতি নজরে পড়ে। যেমন,১৬ সেকেন্ডের এই ভিডিও-র ৮ সেকেন্ডের মাথায় শিশুটির ডান হাতে পাঁচটি স্বাভাবিক আঙুল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
কিন্তু শিশুটি যখন হাত উপরের দিকে তুলছে, তখন তর্জনী হঠাৎ ছোট হয়ে যাচ্ছে। যেন কেউ আঙুলটি কেটে দিয়েছে। এই বিষয়টি সংশয় তৈরি হওয়ায় আমরা এই ভিডিওটির উৎস খুঁজতে শুরু করি।
ভাইরাল ভিডিওটিতে KALACHAN MIYA নামক কোনও এক ব্যক্তির ওয়াটারমার্ক দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়টি সূত্র ধরে ফেসবুকে আমরা নামটি সার্চ করি এবং KALACHAN MIYA নামে একটি ব্লগ পেজ খুঁজে পাই।
পেজটি অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি ২২ অগস্ট এই ভিডিওটি আপলোড করেছিলেন বাঁধের থেকে জল ছাড়ার একটি ভিডিও-র সঙ্গে জুড়ে। ভিডিওটি পোস্ট করে তিনি ক্যাপশনে লেখেন, "Caption no needed! Note: Symbolic video made by AI."
অর্থাৎ এখানেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে এই ভিডিওটি ফেসবুকের অসংখ্য ব্যবহারকারী আসল ভেবে পোস্ট করলেও তা আসল কোনও ঘটনা নয়। বরং এআই দ্বারা এই ভিডিওটি তৈরি কর হয়েছে।
অন্যদিকে এ কথাও জানিয়ে রাখা প্রয়োজন যে ভিডিওটি এআই দ্বারা নির্মিত হলে ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের বেশ কয়েক জেলার পরিস্থিত বাস্তবেই করুণ।
বন্যার মধ্যে এই শিশুটি আটকে ছিল এবং সে বাঁচতে চেয়ে সাহায্যের জন্য হাত তোলে।
উক্ত ভিডিওটি এআই দ্বারা নির্মিত। তবে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের কিছু জেলার পরিস্থিতি বন্যার জেরে বাস্তবেই খারাপ।