একের পর এক শুনানিতে রাতারাতি চাকরিপ্রার্থীদের ভগবান হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যাচ্ছিল ধর্নায় বসা চাকরিপ্রার্থীদের। কিন্তু মঙ্গলবার প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সেই বিষয়টিতে তেমন বলতে শোনা গেল না। চাকরি দূর্নীতি বা চাকরিপ্রার্থীদের কী হবে, এই প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎ বললেন, 'আমি তো বহুদিন ধরেই চাকরিপ্রার্থীদের মামলা শুনছিলাম না। তাঁদের আলাদা করে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।'
বিচারপতির কার্যত এই 'দায়সারা' মন্তব্যে মুষড়ে পড়েছেন গান্ধীমূর্তির নীচে বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা। আজ আন্দোলনের ১০৮৭ দিন। ন্যায়বিচারের আশায় বসে বিভিন্ন জেলার যুবক-যুবতীরা। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপি যোগ দিচ্ছেন সম্ভবত ৭ তারিখ। বিজেপি দায়িত্ব দিলে তিনি লোকসভা ভোটেও লড়বেন বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক বৈঠক করে। বিষয়টিতে চাকরিপার্থীদের তরফে সুদীপ মণ্ডল বললেন, 'ন্যায় বিচার না দিয়ে দুর্নীতির দিকে মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছিলেন বিচারপতি। ভুয়ো চাকরি বাতিল করে যোগ্যদের চাকরি পাওয়ার বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে তিনি দুর্নীতির দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছিলেন। মামলা শেষ না করেই তিনি পদত্যাগ করলেন। লড়াইয়ের আশ্বাস দিয়ে সরে গেলেন। ন্যায় বিচার পেলাম না। আমরা আশাহত। একজন বিচারপতির কাছ থেকে এটা আশা করিনি। তাঁর কাছ থেকে আমরা কোনও সাহায্য পেলাম না।'
উল্লেখ্য, এদিন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, 'বিজেপি একমাত্র সর্বভারতীয় দল যারা তৃণমূলের মতো দুস্কৃতী দলের বিরুদ্ধে লড়ছে। তৃণমূলের বিভিন্ন মন্তব্যই আমায় বাধ্য করেছে রাজনীতিতে আসাতে। চাকরি ছেড়ে বহু আর্থিক ক্ষতি আমার হয়েছে। আমি তো আর মাইনে পাব না। পেনশন অনেক কম। তৃণমূল বহুসময় অপমানজনক কথাবার্তা বলেছে। তাদের দলের কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল। মন্ত্রীর ছদ্মবেশে লুকিয়ে ছিলেন। অনেকে জেলে আছেন।'
পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, 'তৃণমূল ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েছে। এই তৃণমূল বেশিদিন নেই। বিচারকের আসন থেকে লড়াই করা যায় যখন কিছু বিরোধ পিটিশনের আকারে আমাদের কাছে আসে। আমি বিজেপির পার্টি লাইন মেনেই চলব। বিজেপি বলেই দিয়েছে, জিরো টলারেন্স। বিজেপিতে যোগ দেব সম্ভবত ৭ তারিখে।'
কিন্তু তাঁর আচমকা এভাবে আদালত ছেড়ে দিয়ে সক্রিয় রাজনীতি বা ভোটের রাজনীতিতে যোগ দেওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না দীর্ঘদিন ধরে আশায় বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা। কেউ কেউ জানালেন, রাজনৈতিক দলগুলি এবং বিভিন্ন মহলের লোকজন তাঁদের সামনে রেখে রাজনীতি করেছেন। তাঁদের চাকরির বিষয়ে কেউ সাহায্যে করেন নি। প্রাক্তন বিচারপতিও করলেন না। সরে গেলেন।