তাজপুরে সমুদ্র বন্দর নির্মাণের বরাত আগেই পেয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। আর বুধবার তাজপুর বন্দরের নথিপত্র হস্তান্তরিত করা হল আদানি গ্রুপকে। শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থাই তৈরি করবে বন্দরটি। এদিন ইকো পার্কে রাজ্য সরকার আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত ছিলেন গৌতম আদানির পুত্র করণ আদানি। তাঁর হাতেই তাজপুর বন্দরের ফাইলপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত তাজপুরে বন্দির তৈরি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। কিছু আইনি জটিলতা দেখা দেয় তা নিয়ে। অবশেষে সেই জটিলতা কেটেছে। গত সেপ্টেম্বরেই তাজপুর সমুদ্র বন্দর তৈরির বরাত দেওয়া হয় আদানি গোষ্ঠীইকেই। পুজোর আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাম জমানার শেষদিকে তাজপুর গ্রীনফিল্ড বন্দর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তারপর ফের নতুন করে উদ্যোগ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরের পর, তাজপুর বন্দর গঠিত হলে, রাজ্য আরও একটি নতুন বন্দর পাবে। রাজ্যের হাতেই নির্দিষ্ট জমি রয়েছে। এই বন্দরের জন্য কোনো জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না রাজ্য সরকারকে।
কলকাতা থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরে তাজপুরের কাছে এই গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তোলা হবে। জাতীয় সড়ক থেকে প্রস্তাবিত বন্দরের দূরত্ব হবে মাত্র ৫ কিলোমিটার। আর কাছের রেল স্টেশন হবে রাজনগর। এই বন্দরের ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলের নাব্যতা থাকবে ১২.১ মিটার। জোয়ারের সময়ে সেই নাব্যতা আরও বেড়ে দাঁড়াবে ১৬ মিটার। নবান্ন জানিয়েছে, এই বন্দর নির্মাণের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। পোর্টের সঙ্গে আনুসঙ্গিক পরিকাঠামো উন্নয়নে খরচ হবে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হতে চলেছে তাজপুরে। তাজপুর সমুদ্র বন্দর তৈরি হলে যেমন জলপথে বাণিজ্যের পথ প্রশস্ত হবে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, তেমনই হলদিয়া বন্দরের উপর থেকেও চাপ কমবে।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে ইকো পার্কে রাজ্য সরকার আয়োজিত সম্মিলনীতে উপস্থিত হয়েছিলেন আদানি-পুত্র করণ আদানি। ছিলেন আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, শিল্পপতি। এমন চাঁদের হাটেই তাজপুর বন্দরের নথিপত্র হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। সকলকে সাক্ষী রেখে করণ আদানির হাতে তিনি তুলে দেন লেটার অফ ইন্টেন্ট। আশাপ্রকাশ করেন, দ্রুত কাজ শুরু হবে। নবান্ন মনে করে, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি হলে ২৫ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। পরোক্ষে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন আরও অন্তত ১ লক্ষ মানুষ।