ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি নতুন কিছু নয়। কিন্তু চেনা অসুখই যেন অচেনা হচ্ছে দিন দিন। কারণ কাশি শুরু হলে আর থামতেই চাইছে না। কারও কারও কাশি মাসখানেক ধরে চলেছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অ্যাডেনো ভাইরাসের (Adenovirus)জন্যই এমনটা হচ্ছে। প্রায় গোটা রাজ্যই এখন আক্রান্ত এই ভাইরাসের দাপটে।
ঋতু বদলের এই সময়টাতে সর্দি-কাশি-জ্বর (Viral Fever), নানা সংক্রমণজনিত রোগের বাড়াবাড়ি হয়। এতে নতুন কিছু নেই, জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এ বছরও শীত ও বসন্তের সন্ধিক্ষণে সর্দি-জ্বরে ভোগান্তিও বেড়েছে। ঘরে ঘরে ভাইরাল জ্বর, একবার অসুস্থ হলে ৭-১০ দিনের আগে দুর্বলতা কাটছে না। কিন্তু সবথেকে চিন্তার বিষয় কাশি। দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে কাশি। কাশির দমক থামলে হচ্ছে শ্বাসকষ্ট। যা কমাতে নিতে হচ্ছে ইনহেলার।
শহরজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অ্যাডেনো ভাইরাস। কলকাতার শিশু হাসপাতালগুলোতে সংক্রমণ নিয়ে ভিড় বাড়ছে। সূত্রের খবর, আইসিইউতেও ভর্তি অনেকে। সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে গত দেড় মাসে সংক্রমণ নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার অঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, অ্যাডেনোভাইরাসে মৃত্যু হয়নি। আগে থাকতেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন রোগীরা। সঙ্গে কাশি ছিল।'
সুপার আরও জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ না হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে অনীহা। খুবই খারাপ অবস্থা হলে, তবেই হাসপাতালে আসছেন অনেকে। ওইসব ক্ষেত্রেই ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে অ্যাডেনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোনও খবর নেই।
তাঁর কথায়, 'ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে খুবই স্বাভাবিক ট্রেন্ডই হল সর্দি-কাশি। তবে করোনার পর ভাইরালের প্রকোপ বেড়েছে। এখন কাশিটাও ভাবাচ্ছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ৫ থেকে ১৪ বছরের বাচ্চারা। ভাইরাস প্রথমেই থাবা বসাচ্ছে ফুসফুসে।'
ভাইরাসের দাপট রুখতে কী করা উচিত ?
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডা. অঞ্জন চৌধুরীর কথায়, কোভিডের মতোই মাস্ক পরা, হাত ভালো করে ধোওয়া, যেখানে সেখানে থুতু না ফেলা, এগুলোই মেনে চলতে হবে। জ্বর-ঠান্ডায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।'
উল্লেখ্য, বছরের শুরু থেকেই এই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরবর্তী সময়ে একাধিক ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। অন্তত ১২ ধরনের জীবাণু দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে উচ্চ মাত্রার কিছু অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। কিন্তু তা দিয়েও আয়ত্তে সবসময় আনা যায় না সংক্রমণ।
চিকিৎসকদের মতে, আচমকা বায়ুবাহিত ভাইরাসের দাপট ও জ্বর-ঠাণ্ডা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল কলকাতার বায়ুদূষণ। বাতাসের গুণমান নেমে যাওয়ায় ঠান্ডা-সর্দি বাড়ছে। তাই এসময় মাস্ক পরা খুবই প্রয়োজনীয়।
আরও পড়ুন-কলকাতায় আর একটি মহিলা থানা, এবার সার্ভে পার্কে