আসানসোল ও বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের পরের দিনই ধাক্কা রাজ্য বিজেপির। সকালে পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে রাজ্য সভাপতিকে চিঠি দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের দুই বিধায়ক। সূর্য পশ্চিম দিকে যাওয়ার পথে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলায় দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ১০ জেলা নেতা। তাঁরা রাজ্য সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এ দিন বিজেপির রাজ্য কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন মুর্শিদাবাদের দুই বিধায়ক গৌরিশঙ্কর দত্ত এবং সুব্রত মৈত্র। সেই সঙ্গে রাজ্য কর্মসমিতি থেকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছেন মুর্শিদাবাদের দুই নেতা বাণী গঙ্গোপাধ্যায় এবং দীপঙ্কর চৌধুরী। রবিবার সুব্রত মৈত্রকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর বলেন,'রাজ্য ও জেলার বিভিন্ন পদাধিকারীদের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে জেলার দলীয় বিভিন্ন পদের জন্য নাম ঘোষণা করা হয়। বাস্তবে দেখা গিয়েছে ওই তালিকা থেকে বেশ কয়েকজনের নাম বাদ দিয়ে জেলা সভাপতি নিজের পছন্দের অদক্ষ, অযোগ্য, দুর্বল কর্মী এবং তৃণমূলের দালালদের পদে বসিয়েছেন। এই দুর্বল সংগঠনের জন্য গত পুরভোটে ভরাডুবি হয়েছে। কাজেই পদ আগলে বসে থাকার কোনও মানে হয় না। আমি রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে রাজ্য সভাপতিকে চিঠি পাঠিয়েছি।'
তিনি আরও বলেন,'রাজ্য নেতৃত্ব যথাযথ পদক্ষেপ না করলে করেন সমান্তরাল সংগঠন করে বিজেপির ঝান্ডা নিয়ে মাঠে নামব।' বিজেপি বিধায়কের সাংবাদিক বৈঠকের পর রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি জেলা সভাপতি।
অন্যদিকে, নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার দু'জন সাধারণ সম্পাদক-সহ মোট ১০ জন গণইস্তফা দিয়েছেন। উত্তরের সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন তাঁরা। পদত্যাগী বিভাস মণ্ডল জানান,'সব পদকে গুরুত্বহীন করে দিয়েছেন সভাপতি। নিজের ইচ্ছায় দল চালাচ্ছেন। গত পুরভোটেও খেয়ালখুশিকে প্রার্থী দিয়েছেন। তার ফল ভুগতে হয়েছে দলকে।'
শনিবারই দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন প্রাক্তন যুব সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সুকান্ত ও অমিতাভর নাম না করে অনভিজ্ঞ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এদিকে আবার বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা ফেসবুকে লিখেছেন,'কেন এতগুলি ইস্তফা সেটা রাজ্য নেতৃত্বের বিশ্লেষণ করা উচিত।'
কার্যত বিদ্রোহীদের কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন,'যাঁরা পদত্যাগ করছেন, তাঁরা কারণ জানেন। দেবাশীষ মিত্রের শরীর খারাপ। নদিয়া নিয়ে কিছু জানি না। মুর্শিদাবাদ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।' বিজেপি বিধায়কের আলাদা সংগঠন নিয়ে সুকান্ত জানান,'এরকম চেষ্টা আগেও হয়েছে। তা সফল হয় না। দলের শৃঙখলা সর্বোপরি। জেপি নাড্ডাকে জানানোরও পথ আছে। অভিযোগ সত্যি না হলে অন্য অভিসন্ধি আছে। আর মণ্ডল সভাপতি ওঁর পছন্দের হচ্ছে না, ঘোষণার আগে জানলেন কীভাবে?'
আরও পড়ুন- জিতেও অস্বস্তি বাবুলের, সংখ্যালঘু ভোট ভাগ বালিগঞ্জে? বলছে গণিত