প্রয়াত বিশিষ্ট বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ। রবিবার সকালে প্রয়াত হন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বছরখানেক ধরেই বিভিন্ন ধরনের বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন বিশিষ্ট এই বিজ্ঞানী। এর আগে বেশ কিছুদিন হাসপাতালেও থাকতে হয়েছে তাঁকে। আজ, শুক্রবার সকালে মিন্টো পার্কের বাসভবনে মারা যান তিনি। পদ্মভূষণপ্রাপ্ত বিজ্ঞানীর প্রয়াণে বিজ্ঞানীমহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৯৪৫ সালে মুর্শিদাবাদের কান্দিতে জন্ম বিকাশ সিংহর (Bikash Sinha)। স্নাতকস্তরের পড়াশোনা তিনি করেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে। সেখান থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসা শুরু। ভারতের পরমাণু গবেষণা এবং ভ্যারিয়েবল ও হাই এনার্জি গবেষণার ক্ষেত্রে অন্যতম বিজ্ঞানী ছিলেন বিকাশবাবু। নিজের দীর্ঘ গবেষণা ক্ষেত্রে ভারতের পরমাণু পরীক্ষণ থেকে শুরু করে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অংশ ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ছিলেন ভাবা অ্যাটমিক সেন্টার এবং ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টারের সঙ্গে। ১৯৮৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে তাঁর অসামান্য গবেষণার স্বীকৃতি হিসাবে তিনি মর্যাদাপূর্ণ ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো নির্বাচিত হন তিনি।
গবেষণা ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্যকে কাজে লাগাতে ভারত সরকারও তাঁকে গুরুদায়িত্বে রেখেছিল। ২০০৫ থেকে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের (Dr Manmohon Singh) বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত হন। ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয়বার ওই একই পদে নিযুক্ত হন তিনি। ২০১০ সালে বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে পদ্মভূষণ দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় টুইটে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, 'মহান বিজ্ঞানী বিকাশ সিনহার অকাল প্রয়াণে শোকাহত। বাংলার এক কৃতী সন্তান, এই প্রতিভাবান পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানী শুধুমাত্র জ্ঞানের জগতেই নয়, জনজীবনেও তাঁর অবদানের মাধ্যমে আমাদের গর্বিত করেছেন। আমরা তাকে ২০২২ সালে আমাদের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার 'বঙ্গবিভূষণ' প্রদান করতে পেরেছি। এবং মঞ্চে তার ব্যক্তিগত উপস্থিতি আমাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। আমরা তাকে ২০২২ সালেও 'রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার' দিতে পেরেছি। আমি তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ছাত্র এবং ভক্তদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।'