বিজেপি ও কেন্দ্র সরকারকে একহাত নেওয়ার কোনও সুযোগই ছাড়েন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে কোনও ইস্যতেই মমতার নিশানায় থাকেন মোদী সরকার। দুই পক্ষের এত তিক্ততা, রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য ভালো জাতের আম পাঠালেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এটা প্রথমবার নয়, দীর্ঘবছর ধরেই এই পরম্পরা চলছে।
১২ বছরের এই পরম্পরা রক্ষার্থে এ বছরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বাংলার কিছু জনপ্রিয় আম পাঠালেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি এই আম দিল্লির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিয়েছেন।
নাম প্রকাশে এক অনিচ্ছুক সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে হিমসাগর, লক্ষ্মণভোগ ও ফজলি সহ চার কিলো আম পাঠানো হয়েছে। এই আমগুলি খুব সুন্দর করে গিফট বক্সে প্যাক করা হয়। মোদী ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে এই আম পাঠানো হয়েছে দিল্লির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও ভারতের মুখ্য বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কেও।
শুধু দিল্লিতেই নয়, প্রতি বছরের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও আমের সঙ্গে নিজের শুভকামনা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর জন্য ২৬০০ কেজি আম পাঠিয়ে ছিলেন। বাংলাদেশের এই ট্রাকগুলি করে নিয়ে আসা হয় সেই দেশের জনপ্রিয় হাড়িভাঙা আম, ২৬০টি বাক্সে ছিল এই আম। এই পারম্পরিক প্রথাকে বজায় রাখতে গত বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও দিল্লির প্রধানমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও আম পাঠিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, মোদী-মমতার মধ্যে টক-ঝাল সম্পর্ক যেন কিছুতেই শেষ হতে চায় না। কেউ কাউকে তির্যক নিশানায় বিঁধতে পিছুপা হন না। প্রধানমন্ত্রী এর আগেই জানিয়েছিলেন যে ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে কুর্তা-পায়জামা ও মিষ্টি উপহার হিসাবে পাঠিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, অক্ষয় কুমারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মোদী জানিয়েছিলেন যে বিরোধী দলগুলিতেও তাঁর অনেক বন্ধু রয়েছে এবং মমতা দিদি তাঁকে প্রত্যেক বছর সুন্দর সুন্দর কুর্তা উপহার দেন। সম্প্রতি বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়েও মোদী-মমতা তরজা এখন তুঙ্গে। আর তারই মাঝে সৌজন্যতা ও পরম্পরা বজায় রাখতে মোদীকে আম পাঠালেন মমতা।