গত শুক্রবার রাজ্যের রেশন দুর্নীতির তদন্তে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে হানা দেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকরা। সরবেড়িয়া অঞ্চলের আঙ্কুঞ্জিপাড়ায় তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতেই যান তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী শাহজাহানের বাড়ি তালা ভাঙতেই গ্রামবাসীরা তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। গ্রামবাসীদের আক্রমণে আহত হন চার ইডি আধিকারিক। পিছু হঠতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। এই ঘটনার পর থেকেই ফেরার শেখ শাহজাহান। শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে ইতিমধ্যেই লুকআউট নোটিশ জারি করেছে কেন্দ্র। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, বাংলাদেশ লাগোয়া এই অঞ্চল দিয়ে পড়শি দেশে পালিয়ে যেতে পারেন তৃণমূল নেতা।
সন্দেশখালিতেই লুকিয়ে রয়েছেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পর সোমবার ফের এই দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ জেনেও কিছু করতে পারছে না। অপরদিকে, সন্দেশখালি, বনগাঁয় হামলার পর, আজ ইডি-র আধিকারিকদের নিয়ে কলকাতায় বৈঠক ইডি ডিরেক্টরের। বৈঠক করবেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের ডিরেক্টর রাহুল নবীন। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে এই বৈঠকে ইডি-র জোন ওয়ান ও জোন টু-য়ের আধিকারিকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, সন্দেশখালি, বনগাঁয় হামলা প্রসঙ্গ ছাড়াও রেশন দুর্নীতি মামলার অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।
এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। গুলি, বন্দুক ছেড়ে দিন, একটা পাথর মারারও লোক নেই সেখানে। কিন্তু পশ্চিম বাংলা এবং পশ্চিমবাংলার সীমা যেভাবে উপদ্রুত এলাকা হয়ে যাচ্ছে। যেখানে আইনশৃঙ্খলা নেই সরকারের উপস্থিতি নেই পুলিশ প্রশাসনের দেখা নেই। সেন্ট্রাল এজেন্সির লোককে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পালাতে হচ্ছে..... তো ভাবুন এটা বাংলাদেশ হয়ে গেছে? নাকি পশ্চিমবাংলা আছে। যে সরকার এখানে আছে সেই সরকার যদি দেশবিরোধী ক্রিয়া-কলাপকে সমর্থন দেয়, শেল্টার দেয়। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গ আর কতদিন ভারতবর্ষের সঙ্গে থাকবে?
দিলীপ ঘোষ আরও যোগ করেন, গত নির্বাচনের সময় কোচবিহারের শীতল কুচিতে ও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। বিএসএফের থেকে বন্দুক ছিনতাই করতে এসেছিল। গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল। ঘটনাটা বড় কথা নয়, কিন্তু তার পেছনে যে ব্যাকগ্রাউন্ড আছে কোন অবস্থায় আছে আমাদের সীমান্ত? কারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে! এই সমস্ত এলাকায় সিএএ লাগু হওয়ার পর আগুন জ্বলেছে। সরকারি সম্পত্তি জ্বালানো হয়েছে, মন্দির ভাঙ্গা হয়েছে, তো ক্রমশ হিন্দু শূন্য হয়ে যাচ্ছে। বিরোধী কার্যকলাপ যারা করে তাদের রমরমা, আর সরকারি সম্পত্তি লুট হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে, এই যে একেকজনের বড় বড় বাড়ি গাড়ি, সবাই নেতা শিল্পপতি হয়ে যাচ্ছে, বর্ডারে এত টাকা আসছে কী করে? এই যে খোলা ভাবে এদিকে ড্রাগ আসছে, ওদিকে সোনা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ নয় দেশের আইন-শৃঙ্খলা, দেশের সুরক্ষা বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। সরকার চেষ্টা করছে চারিদিক দিয়ে টেরোরিজম বন্ধ করার আর এখান দিয়ে টেরোরিস্টরা দেশবিরোধী চক্রান্তকারীরা এজেন্টরা অবাধে ঢুকে পড়ছে।