রাজ্যের চার কেন্দ্রের লোকসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে আপত্তি তুলে আদালতের শরণাপন্ন হতে চলেছে বিজেপি। বসিরহাট, ঘাটাল, জয়নগর, ডায়মন্ড হারবারের ফল নিয়ে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। একাধিক বুথের সিসি ফুটেজ কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পরীক্ষার আবেদন করা হবে। সেই সঙ্গে দাবি করা হবে সিবিআই তদন্ত। আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার শুভেন্দু বলেন,"আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করবেন চার কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীরা। বসিরহাটে তৃণমূল সাংসদের প্রার্থী পদ বাতিলের আবেদন করা হবে। জয়নগর, ডায়মন্ড হারবারের একাধিক বুথের সিসি ফুটেজ কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পরীক্ষার আবেদন করব। ঘাটালের একাধিক বুথের সিসিটিভি ফুটেজও কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পরীক্ষার আবেদন করা হবে। প্রয়োজনে আমরা সিবিআই তদন্ত চাইব'।
শুভেন্দু আরও বলেন,'১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইনে ঘাটাল নিয়ে পিটিশন দায়ের করছেন হিরন্ময় চট্টোপাধ্য়ায় । কেশপুর এবং সবং থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং রিপোর্ট দিয়ে আবেদন জানাবেন'। বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি,তৃণমূল শুনে রাখুক এই পিটিশন ৪-৫ বছর ধরে ঝুলে থাকবে না। ৬ মাসের মধ্যে যাতে মিটে যায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করছি'।
বসিরহাট নিয়ে কী আপত্তি বিজেপির? শুভেন্দুর বক্তব্য,'বসিরহাট নিয়ে পিটিশন দায়ের করছেন রেখা পাত্র। যে আইন বলে দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, ওই একই আইনে হাজি নুরুলের বাতিল হওয়ার কথা'।
ডায়মন্ড হারবারে বিরাট জয় পেয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বিরাট ব্যবধানে জয় নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এ দিন শুভেন্দু বলেন,'ডায়মন্ড হারবার নিয়ে পিটিশন দিচ্ছেন অভিজিৎ দাস। ওয়েবকাস্টিং সিসিটিভি ফুটেজের তদন্ত হবে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবে। রিপোর্ট যদি পক্ষে আসে, তাহলে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল করে সিবিআই তদন্তের জন্য আবেদন জানাব। পিটিশন জমা দেবেন জয়নগরের অশোক কাণ্ডারীও'।
এদিকে, নির্বাচনে কারচুপির বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন কোচবিহারের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। তাঁর দাবি,শতাধিক ইভিএম বদল হয়েছে। ছাপ্পাভোটেরও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনিও। এনিয়ে শুভেন্দু জানান,'১৮ রাউন্ড পর্যন্ত এগিয়ে ছিলেন নিশীথ। ১৯-২০ রাউন্ডে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইভিএম নম্বরের সঙ্গে ১৭ সি ফর্মের ১৯-২০ রাউন্ডের নম্বর মেলেনি। প্রতিবাদ করলে বিজেপির কাউন্টিং এজেন্টকে জেলাশাসকের নির্দেশে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাঁচ দিন জেল খেটে জামিন পেয়েছেন তাঁরা। আমরা কোচবিহারের বিষয়টিও খোঁজ খবর নিচ্ছি। যেহেতু ৩০ দিনের মধ্যে ইলেকশন পিটিশন করতে হয়, আমাদের হাতে সময় আছে কিছুটা। আপাতত চারটি পিটিশন মঙ্গল-বুধের মধ্যে জমা পড়ছে'।