টানা ২ ঘণ্টা ধরে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের বৈঠক চলল। বৈঠকের নির্যাস ফলপ্রসূ বলে দাবি করল দুপক্ষই। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানালেন, আইনি জটলিতা থাকলেও সমস্যার সমাধানে সরকার সদর্থক উদ্যোগ নিয়েছে। আদালত যেভাবে চাইবে সেভাবেই নিয়োগ হবে। সেই সঙ্গে ব্রাত্য মনে করিয়ে দিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই চাকরি দিতে পারেন, দেবেন। যে দাবি নিয়ো বিরোধীদের দাবি, সবটাই আষাঢ়ে গল্প। আইনি জটিলতা বাস্তবে কাটবে না।
এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের হাজার দিন পেরিয়ে গিয়েছে। হাজারতম দিনে চাকরিপ্রার্থী রাসমণি পাত্রের ন্যাড়া হওয়ার ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। অকুস্থলে গিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের আশ্বাস দিয়ে আসেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সোমবার বিকাশভবনে কুণালের মধ্যস্থতায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন চাকরিপ্রার্থীরা। ২ ঘণ্টা বৈঠক চলার পর রাসমণি বলেন,'কোথায় জট সেটা আমরা জানতে পেরেছি। দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ২২ তারিখ জানতে পারব, কতটা বৈঠক সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে। আশা করছি, মাননীয়ার উদ্যোগে দ্রুত স্কুলে যাব।'
আইনি জটিলতার বিষয়টি স্বীকার করে সরকারের উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ২২ ডিসেম্বর ফের বৈঠক। এক চাকরিপ্রার্থী জানান,'চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন চলবে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। ২২ তারিখ দুপুর ২টোয় মিটিং। সেদিনই চূড়ান্ত দিন জানতে পারব। আমরা বৈঠক নিয়ে খুশি। আশা করি, সমস্যা মিটে যাবে। সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি আটকে আছে। জটিলতা যে কোনও সময় কেটে যাবে।'
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন,'আইনি জটলিতা তো আছে। সেই সঙ্গে আছে আমাদের সদর্থক উদ্যোগও। আমি বরাবরই বলে এসেছি, আদালত যেভাবে চাইবে সেভাবে নিয়োগ করব। আশা করছি, আইনি জটিলতা কেটে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই চাকরি দিতে পারেন, দেবেন। একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। ২২ তারিখ আবার আলোচনা করব। আদালতের রায় আমাদের উপর নির্ভর করে না। আশা করছি, মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে নিয়োগ দিতে শুরু করব।'
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভুল হয়েছে বলে কার্যত মেনে নিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়,'বৈঠক ফলপ্রসূ। আইনি জট কাটাতে সরকারের তরফে যা যা ব্য়বস্থা নেওয়ার দরকার, তা করা হবে। এটা একটা প্রক্রিয়া। তা দফায় দফায় কাটবে। কোথাও না কোথাও ভুল হয়েছিল। সেজন্য এই জটিলতা। এই সমস্ত দিক বাস্তবসম্মতভাবে সামলে সমাধানের পথ দেওয়া হয়েছে। সরকারের তরফে প্রতিটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'
সরকারের উদ্যোগে খুশি নয় বিরোধীরা। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন,'দেখুন কেউ যদি আশাবাদী হন, আমরা নিরাশ নই। তৃণমূল আন্তরিকভাবে সমস্যার সমাধান চাইলে, টাকা দিয়ে যারা চাকরি পেয়েছে তাদের চিহ্নিত করত। সেই আসনে চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হত। টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে যারা, তাদের চাকরি থাকবে এটা চলতে পারে না। আইনি জটিলতা বাস্তবে কাটবে না। আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আছি। তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল।'