সিংহের নাম আকবর, সিংহীর নাম সীতা। এনিয়ে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। শুক্রবার ওই মামলায় সিংহ দম্পতির নামবদলের নির্দেশ দিল আদালত। সরকারি আইনীজীবীর কাছে বিচারপতি জানতে চাইলেন, আপনি কি নিজের বাড়ির পোষ্যর নাম হিন্দু ভগবান বা ধর্মপ্রচারকের নামে দেবেন?
সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের মন্তব্য, দেশে বহু মানুষ সীতাকে পুজো করেন। আর আকবার ধর্মনিরপেক্ষ মুঘল সম্রাট। বিচারপতি বলেন,'আপনি কি আপনার বাড়ির পোষ্যর নাম হিন্দু ভগবান বা মুসলিমদের ধর্মপ্রচারকের নামে দেবেন? আমার মনে হয়, আমরা কেউই সিংহ দম্পতির নাম আকবর আর সীতা দিতাম না। কেউ কি পশুর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দিতে পারেন?' তিনি যোগ করেন,'দেশের বিরাট অংশের মানুষ সীতাকে পুজো করেন। আকবরের নামেও সিংহের নাম দেওয়ার বিরোধিতা করছি। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ মুঘল শাসক ছিলেন'।
কীভাবে এই বিতর্ক শুরু?
ত্রিপুরার সিপাহিজলা চিড়িয়াখানা থেকে আটটি পশু আনা হয় শিলিগুড়ি সাফারি পার্কে। এর মধ্যে 'আকবর' এবং 'সীতা' নামের সিংহ এবং সিংহীও আছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তারা জানায়, সিংহ ও সিংহীর নাম 'আকবর' ও 'সীতা' রেখে হিন্দুদের অপমান করা হয়েছে। আকবর ছিলেন একজন মুঘল শাসক। আর সীতাকে দেবী হিসেবে পুজো করেন হিন্দুরা। সিংহীর নাম পরিবর্তনের আর্জি করে ভিএইচপি। সিংহ ও সিংহীকে আলাদা করে রাখারও দাবি জানানো হয়।
রাজ্য সরকার কী বলল?
হাইকোর্টে শুনানিতে রাজ্য সরকার বলেছিল, ত্রিপুরার চিড়িয়াখানা থেকে এই সিংহ-সিংহীকে আনা হয়েছিল। তারাই ওই নাম দিয়েছিল। অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল দেবজ্যোতি চৌধুরী দাবি করেছিলেন, রাজ্য সরকার পশুদের নাম দেয়নি। ভিএইচপি-র দাবি, এই সিংহ এবং সিংহীকে ত্রিপুরা থেকে আনা হয়েছে। তবে নাম এ রাজ্য দিয়েছে।