জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে গড়ে ওঠা বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে 'ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অথরিটি'-কে নির্দেশ দিল আদালত।
পূর্ব কলকাতার জলাভূমি সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে ওই নির্মাণ হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেটি চার সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হবে। সেই কাজে বিধাননগর পুরনিগমকে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ। সেই সঙ্গে পূর্ব কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত জলাভূমির অবস্থা নিয়ে মুখ্যসচিবকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২২ ফেব্রুয়ারি।
পূর্ব কলকাতার জলাভূমি রামসা তালিকাভুক্ত। ফলে তার আন্তর্জাতিক গুরুত্ব রয়েছে। অথচ ওই এলাকায় জলাভূমি ভরাট করে একের পর এক বেআইনি নির্মাণ হয়ে চলেছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠছে। বাম আমল থেকে পূর্ব কলকাতার এই অংশ নানা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। বর্তমান শাসনেও সেই ধারা অব্যাহত।
১২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই জলাভূমির প্রায় ৪০ শতাংশ বুজিয়ে ইতিমধ্যেই বেআইনি নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গত ১৫ বছরে কীভাবে জলাভূমি ভরাট হয়েছে তা উপগ্রহ চিত্রেও স্পষ্ট। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা এভাবে একের পর এক কাজে জলাজমি ব্যবহৃত হতে থাকলে রামসার তালিকার বাইরে চলে যাবে। তার পর সেই তালিকায় ফেরানো বেশ কষ্টসাধ্য। তাই আদালতের এ দিনের রায়কে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা।
পূর্ব কলকাতার জলাজমি 'ভেড়ি' নামে পরিচিত। প্রতিদিন প্রায় ৭০০ মিলিয়ন লিটার বর্জ্য জলকে সূর্যালোকের সাহায্যে জলজ বাস্তুতন্ত্রে প্রাকৃতিক উপায়ে শোধিত হয়। ফলে কলকাতার বিশাল পরিমাণ নোংরা জল প্রতিদিন অজান্তেই পরিস্রুত হচ্ছে। এই জলাভূমি না থাকলে প্রচুর খরচ করে সেই জলকে শোধন করতে হত। সে কারণে কলকাতার বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যের জন্য়েও এই জলাভূমির সংরক্ষণ দরকার বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।