আরজি কর কাণ্ডে সন্দীপ ঘোষকে দফায় দফায় জেরা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তবে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া উত্তরে কি সন্তুষ্ট নন গোয়েন্দারা? সম্ভবত সন্দীপ ঘোষের সব কথা বিশ্বাস করছে না CBI। সেই কারণে তাঁর পলিগ্রাফ টেস্ট করাতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তার জন্য কোর্ট থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতিও পেয়ে গেলেন।
বৃহস্পতিবারই সন্দীপ ঘোষকে শিয়ালদার স্পেশাল আদালতে তোলা হয়। সেখানে সন্দীপ ঘোষের পলিগ্রাফ টেস্টের আবেদন মঞ্জুর করা হয়। মনে করা হচ্ছে, কয়েকদিনের মধ্যেই পলিগ্রাফ টেস্ট হবে অভিযুক্তের। এর আগে সঞ্জয় রায়েরও পলিগ্রাফ টেস্টের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তবে শুধু সন্দীপ নন, এই টেস্ট দিতে হবে আরও ৪ জুনিয়ার ডাক্তারকে। যে রাতে ঘটনাটি ঘটে সেদিন সেদিন ওই জুনিয়ার ডাক্তাররা ডিনার খেয়েছিলেন নির্যাতিতার সঙ্গে।
সিবিআই সূত্রে খবর, মোট ৫ জনের এই পলিগ্রাফ টেস্ট করা হবে। জেরার সময় যে সব তথ্য সন্দেহভাজনরা দিয়েছেন সেগুলো সত্যি কি না তা যাচাই করতেই এই টেস্ট।
পলিগ্রাফ টেস্ট কী ?
পলিগ্রাফ টেস্টের সময় কোনও ব্যক্তির শারীরিক প্রতিক্রিয়া পরিমাপ করা হয়। কেউ মিথ্যা বললে তাঁর শারীরিক প্রতিক্রিয়ার পরিবর্তন হয়, যেমন হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। তখন পলিগ্রাফ পরীক্ষার ফলাফলগুলি একটি গ্রাফে দেখানো হয়। কোনও ব্যক্তি কীভাবে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন, তাঁর শারীরিক প্রতিক্রিয়া কেমন হচ্ছে, কীভাবে কথা বলছে এসব দেখা হয় পলিগ্রাফ টেস্টে।
এই টেস্টের সময় বিশেষ করে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার গতি, ত্বক ও মাংসপেশীর প্রতিক্রিয়া, হার্টবিট এগুলো দেখা হয়। তবে পলিগ্রাফ পরীক্ষা সবসময় সঠিক হয় না। কারণ অনেকে এই টেস্টকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, আজ আরজি কর কাণ্ডে রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। পুলিশের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দেখা যায় না। মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। 'এই মামলায় রাজ্য সরকারের ও পুলিশের ভূমিকা তা আমি আমার গত ৩০ বছরের কেরিয়ারে কোনওদিন দেখিনি।' মন্তব্য করেন বিচারপতি পারদিওয়ালা।
আরজি কর কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্ট আজ রাজ্য সরকার ও সিবিআই-এর কাছে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল। ১৪ অগাস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে কী হয়েছিল, তার রিপোর্ট জমা দেয় দুই পক্ষ। রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের ২১ জন আইনজীবী। তাঁদের হয়ে লিড করেন কপিল সিব্বল। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে আইনজীবী ছিলেন ৫ জন। শুনানির শুরুতেই বিচারপতিরা জানান, ডাক্তারদের কাজে ফিরতে হবে। সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ পথ চেয়ে বসে আছে। এতে চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রভাবিত হতে পারে।