Advertisement

বাপ রে কী ডানপিটে মেয়ে! রাতবিরেতে বেরিয়ে পড়েন সাপ ধরতে

তিনি বলেন, "৫-৬ বছর ধরে পুরো দমে কাজ শুরু করেছি। আগে বন্যপ্রাণ উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যেতাম। তারপর ধীরে ধীরে আগ্রহ বাড়ে। তখন ছবি তুলতে যেতাম বলা যেতে পারে।"

চন্দ্রিমা বসু
অভিজিৎ বসাক
  • কলকাতা,
  • 15 Jul 2021,
  • अपडेटेड 7:03 AM IST
  • বাপ রে কী ডানপিটে মেয়ে
  • রাতবিরেতে সাপ ধরতে বেরিয়ে পড়েন
  • ভয় নেই, ডর নেই

বাপ রে কী ডানপিটে মেয়ে! রাতবিরেতে বেরিয়ে পরেন সাপ ধরতে। ভয় নেই, ডর নেই। দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন সে কাজ। আগে মা আপত্তি জানাতেন। তবে এখন বুঝতে পেরেছেন। আর বাবা আশকারা বরাবরাই ছিল!

তিনি চন্দ্রিমা বসু। পেশায় স্কুলশিক্ষক। আর নেশায় প্রকৃতিপ্রেমী। সেটাই বোধহয় তাঁর আসল পরিচয়। আদি বাড়ি কোচবিহারে। এখন থাকেন উত্তর ২৪ পরগণা জেলার চাঁদপাড়া এলাকায়। তিনি সম্ভবত রাজ্যের একমাত্র সাপ উদ্ধারকারী মহিলা।

তিনি বলেন, "৫-৬ বছর ধরে পুরো দমে কাজ শুরু করেছি। আগে বন্যপ্রাণ উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যেতাম। তারপর ধীরে ধীরে আগ্রহ বাড়ে। তখন ছবি তুলতে যেতাম বলা যেতে পারে।"

এরপর বন দফতরের সঙ্গে উদ্ধারে যেতে শুরু করেন। প্রশিক্ষণও নেন। ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (ডব্লুটিআই) মানুষ আর হাতির সঙ্ঘর্ষ ঠেকাতে এক প্রকল্প শুরু করেছিল। উত্তরবঙ্গে সে কাজে যুক্ত হন তিনি। সেই সূত্রেই আলাপ স্বামীর সঙ্গে। স্বামীর নাম সৌমিত্র রায়। এরপর বছর দুয়েক। 

সাপের ব্যাপারে সচেতন করার কাজও করেন। তিনি জানান, যেভাবে প্রাণীদের যত্ন নিতে পারব, তা অন্য অনেকেই পারবেন না। কারণ এ জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। লেখাপড়া করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, "প্রথম প্রথম অনেক বাঁধা এসেছে। একটা মেয়ে সাপ ধরছে, সেটা বাড়িতে বোঝাতে সমস্যা হয়েছে।" আর তাই বাড়িতে ফাঁকি দিতে হয়েছিল তাঁকে। তিনি বলেন, পাখি ধরছি বলে যেতে হয়েছে, অথচ সাপ ধরতে গিয়েছি। আপত্তি আসত মায়ের তরফ থেকে। পরে অবশ্য তিনি দেখলেন অসুবিধা নেই।

কাউকে সাপে কামড়ালে তিনি ফোনেও অনেক সাহায্য করেন। আর সেই সূত্রে কোন এলাকায় কোন সাপ কামড়াচ্ছে, তার তথ্য রয়েছে। কখনও স্কুল থেকে ফিরে আবার কখনও বা স্কুল থেকেই চলে গিয়েছেন উদ্ধারে, এমন হয়েছে। 

Advertisement

তাঁর আদি বাড়ি কোচবিহারে। তিনি বলেন, 'পাখি চিনিয়েছেন বাবা। আগে কোচবিহারের স্কুল পড়াতেন। ওই এলাকায় সাপ দেখলেই পিটিয়ে মারতেন স্থানীয় বাসিন্দারা।' তবে পড়ুয়াদের মধ্যে এ ব্য়াপারে সচেতনতা বাড়িয়েছেন। সেগুলো বদলানো হয়েছে। বুঝিয়ে বুঝিয়ে সে ধারণা বদল করা হয়েছে। পাখি দেখানো শেখানোও শুরু করেন পড়ুয়াদের নিয়ে।

তিনি বলেন, "অনেক সময় ক্লাস ছেড়ে মাঠে নিয়ে যেতাম পড়ুয়াদের। আর তারা প্রাণী-পাখি চিনেছে। এটাই বড় পাওনা। এমন হয়েছে কোনও পাখির বিজ্ঞানসম্মত নাম জানা থাকলেও তার স্থানীয় নাম জানা নেই। তা জানতে পেরেছি পড়ুয়াদর মাধ্যমে।"

প্রচুর উদ্ধারের কাজ হয়েছে। কোনটা বেশি উদ্ধার হয়েছে? তিনি জানান, সাপ আর পাখি কাছাকাছি হলেও সাপ সামান্য এগিয়ে থাকবে। উদ্ধারে গিয়ে হাজার রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে। কেউ জানতে চেয়েছেন, বিষ কোথায় বিক্রি করো! আবার সাপ ধরার জন্য টাকা দেওয়া হবে, এমন প্রস্তাবও পেয়েছে। 

এখন দায়িত্ব পেয়েছেন এক ভামের শাবককে সারিয়ে তোলার। আপাতত তার যত্নআত্তির কাজ চলছে। তিনি জানান, ভাম দুর্বল শাবককে ফেলে চলে যায় বা যত্ন কম করে। একে বাঁচানো খুব কষ্টকর। দিন ৬ বার খাওয়াতে হবে। এ ব্যাপারে লেখাপড়া করতে হয়েছে প্রচুর। তাই কাজের সুবিধা।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement