নিঃসঙ্গ অবস্থাতেই দিন কাটত তাঁর। মৃত্যুর পরেও নিঃসঙ্গতাই সঙ্গী হল বৃদ্ধার। ৪ দিন ধরে দেহ পচল, গলল বাড়িতেই। দুর্ঘন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীদের চেষ্টায় দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার মুরারিপুকুরে। মৃত বৃদ্ধার নাম ভগবতী দাস।
৪ দিন ধরে দেহ পড়ে রইল ঘরেই
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ভগবতী দাসের কোনও সন্তান নেই। স্বামীও মারা গিয়েছেন অনেক আগে। মুরারিপুকুরের বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। দিন পাঁচেক আগে প্রতিবেশীরা তাঁকে শেষবার দেখতে পেয়েছিলেন। তারপর থেকে আর দেখা যায়নি। কালীপুজোর রাতে জানতে পারা যায় বৃদ্ধার পরিণতি।
এক প্রতিবেশী জানালেন, কালীপুজোর রাতে মুরারিপুকুরের ওই বাড়িটি থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে। গোটা পাড়ায় পচা গন্ধ। প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে, বৃদ্ধার পচা, গলা দেহ পড়ে রয়েছে খাটে। সোমবার সকালে দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
কোচবিহারের মতোই ঘটনা ঘটল কলকাতায়
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে একই রকম ঘটনা ঘটে কোচবিহারে। এক বৃদ্ধার মৃতদেহ উদ্ধার হয় কোচবিহার শহরের দেবীবাড়ি এলাকায়। তাঁর নাম কেয়া চক্রবর্তী। বাড়িতে ওই বৃদ্ধা একাই থাকতেন বলে জানা যায়। দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। প্রতিবেশিরা ওই বৃদ্ধার বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পান। এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দু-তিনদিন যাবত তাঁকে দেখা যায়নি বলে প্রতিবেশীদের দাবি করেন।
কলকাতা ও শহরতলি শুধু নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বহু বৃদ্ধ, বৃদ্ধা নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন। সল্টলেকে বৃদ্ধ, বৃদ্ধাদের নিঃসঙ্গতা কাটাতে ভাল উদ্যোগ নিয়েছিল পুলিশ। সপ্তাহে একদিন স্থানীয় পুলিশ বাড়িতে গিয়ে চা খেয়ে গল্প করে নিঃসঙ্গতা কাটানোর চেষ্টা করেন। মনোবিদরা বলছেন, আসলে একা থাকার জেরে অনেককে অবসাদ গ্রাস করছে। মনের কথা কাউকে বলতে না পারার কষ্ট বুকে বয়ে নিয়ে চলেছেন বহু মানুষ। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন যদি আরও বেশি সক্রিয় হয়, তাহলে এই ধরনের ঘটনা রুখে দেওয়া কিছুটা সম্ভব।