ডেঙ্গি বাড়ছে। ফিভার ক্লিনিকেও ভিড় বাড়ছে জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের। যাদের মধ্যে ২০ শতাংশেরই ডেঙ্গি। এমনটাই জানা যাচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে। গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত ৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজের ফিভার ক্লিনিকে আসা মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এবং তাদের মধ্যে অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।
চিকিৎসকদের মতে, হাসপাতালের জ্বর ক্লিনিকে যাওয়া প্রায় ২০ শতাংশই ডেঙ্গি আক্রান্ত। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ জন রোগী আসছেন। ক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত একজন ডাক্তার জানিয়েছেন, দেড় সপ্তাহ আগে ওই সংখ্যা ১৮০ থেকে ২০০ জনের মতো ছিল। এখন বাড়ছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অবিরাম বৃষ্টি এবং আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে জনসাধারণের অনীহার ফলে শহরজুড়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
উল্লেখ্য, রবিবার দমদমের মতিঝিলের ২০ বছর বয়সী এক মহিলা সমাপ্তি মালিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দক্ষিণ দমদম পৌরসভার অধীন এলাকায় এটা সপ্তম ডেঙ্গি নথিভুক্ত মৃত্যু। যাদবপুরের ডোনা দাসের ১২ বছর বয়সী মেয়ে ডেঙ্গু-জনিত কার্ডিয়াক ডিসফাংশনে মারা যাওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে সমাপ্তি মারা যায়।
হাসপাতালের অন্য এক আধিকারিক জানালেন, তাঁদের ফিভার ক্লিনিকে ভিড় বাড়ছে। এখন ৮২ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে ২জন আইসিইউতে ভর্তি। এখানেই ডোনা মারা যায় বলে জানা গেছে। তবে এখন রোগীরা জ্বর হলেই ফিভার ক্লিনিকে চলে আসছেন। এটা একটা ভালো দিক।
কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম শুক্রবার ঘোষণা করেছিলেন যে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত কলকাতায় ৩,৮০২টি ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গত ৩০ দিনে রিপোর্ট করা হয়েছে।
পুর-আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অগাস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত ৭০০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে৷ আগস্টের শেষ নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৪০০। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তা আরও বেড়ে ২,৭০০ এবং তৃতীয় সপ্তাহে ৩,৮০২-এ দাঁড়িয়েছে।
বেলেঘাটা আইডিতেও ভিড়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছে ভিড় বাড়ছে। সোমবার আইডি হাসপাতালে ৪৫ জন ডেঙ্গি রোগী ভর্তি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা খারাপ ছিল। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকেও রোগীদের উপস্থিতিতে তীব্র বৃদ্ধি দেখা গেছে।
জ্বরের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ফলে রাজ্য সরকার জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ১ লাখ কর্মীর ছুটি বাতিল করেছে। কলকাতা পুরসভা ৪১টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং আটটি ডেঙ্গি শনাক্তকরণ কেন্দ্র পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত ছুটির দিনে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।