Advertisement

Durga Puja 2023: দুর্গাপুজোর থিমে চমক দিতে প্রস্তুত সল্টলেক, সাজছে ডোকরা শিল্প-সঙ্গীতের ইতিহাসে

Durga Puja 2023: পুজো আসতে আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। গোটা বছর বাঙালি এই পুজো আসার অপেক্ষায় থাকেন। এখন তো মহালয়ার পর থেকেই পুজোর আমেজ দ্বিগুণ হয়ে যায়। কলকাতার পাশাপাশি পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সল্টলেক জুড়েও।

দুর্গাপুজো ২০২৩
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 07 Oct 2023,
  • अपडेटेड 5:33 PM IST
  • পুজো আসতে আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। গোটা বছর বাঙালি এই পুজো আসার অপেক্ষায় থাকেন। এখন তো মহালয়ার পর থেকেই পুজোর আমেজ দ্বিগুণ হয়ে যায়। কলকাতার পাশাপাশি পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সল্টলেক জুড়েও।

পুজো আসতে আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। গোটা বছর বাঙালি এই পুজো আসার অপেক্ষায় থাকেন। এখন তো মহালয়ার পর থেকেই পুজোর আমেজ দ্বিগুণ হয়ে যায়। কলকাতার পাশাপাশি পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সল্টলেক জুড়েও। বেশ কয়েক বছরে কলকাতাকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে সল্টলেকও। সল্টলেকের জনপ্রিয় দুই পুজো এফডি ও বিজে ব্লকের থিম এ বছর কী জেনে নিন।  


এফডি ব্লক
সল্টলেকের প্রথম থিম পুজো শুরু হয়েছিল এই এফডি ব্লকেই। দেখতে দেখতে এই ব্লকের পুজো পা দিয়েছে ৩৯ বছরে। এই বছরের পুজো কমিটির সেক্রেটারি শিলাদিত্য রায়চৌধুরী জানান এই বছর এফডি ব্লকের থিমট হল তিন হাজার বছরের পুরনো একটা ফর্ম অফ আর্ট, যা মেসোপটেমিয়া থেকে এসেছে, যেটার প্র্যাকটিস এখনও হয়ে থাকে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলাতে। ডোকরা শিল্প নামে পরিচিত সেই শিল্পকেই এফডি ব্লক এই বছর তুলে ধরবে তাদের পুজোতে। সেক্রেটারি এও জানিয়েছেন যে এই দুই জেলার মাত্র ১০০টি পরিবার রয়েছে যাঁরা ডোকরা আর্টকে বাঁচিয়ে রেখেছে, সেই প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া শিল্পকেই বাঁচিয়ে রাখার আবেদন নিয়ে এক সচেতনতার বার্তা দেবে এ বছর এফডি ব্লকের পুজো। এখানে উল্লেখ্য, ডোকরা হল "হারানো মোম ঢালাই" পদ্ধতিতে তৈরি একটি শিল্প কর্ম। এই শিল্পের ইতিহাস প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরের পুরোনো। সিন্ধু সভ্যতার শহর মহেঞ্জদোড়োতে প্রাপ্ত "ড্যান্সিং গার্ল" বা "নৃত্যরত নারী মূর্তি" হল ডোকরা শিল্পের নিদর্শন। আর সেটাই দেখা যাবে এফডি ব্লকের গোটা পুজো মণ্ডপ জুড়ে। বিভিন্ন আকার-আকৃতির ডোকরা শিল্পের নিদর্শন দেখা যাবে এই এফডি ব্লকে। বাঁকুড়া থেকে প্রায় ৭০ জন শিল্পী এখানে এই মণ্ডপ সজ্জার কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে। 
সেক্রেটারি এও জানান, তাঁরা চেষ্টা করছেন যে ডোকরা শিল্প কীভাবে তৈরি করা হয় তা যাতে মানুষ দেখতে পারে তার জন্য মণ্ডপের পাশেই যদি লাইভ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ব্যবস্থা করা যায়। তবে এটা এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। প্রতি বছরের মতো এফডি ব্লকের এ বছরের প্রতিমাও সাবেকী ধাঁচের হচ্ছে। এই মূর্তি তৈরি করছেন মিন্টু পাল। এফডি ব্লকের পুজোর বাজেট প্রায় ৫০ লক্ষ। এই ব্লকের পুজোর প্রধান আকর্ষণ হল মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া ব্লকের বাসিন্দাদের খাওয়া-দাওয়া তো আছেই। গতবারের মতো এ বছরও এফডি ব্লকের ইচ্ছে তাদের পুজো উদ্বোধন করুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয়ার দিনই দর্শকের জন্য এই পুজো খুলে দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও যদি মুখ্যমন্ত্রীর সময় পাওয়া যায় তবে সেই অনুযায়ী এই পুজোর উদ্বোধন হবে। 

Advertisement

এজি ব্লক
এবারের দুর্গাপুজোয় সঙ্গীত থেকে গান তৈরি হওয়ার আদি কাহিনী জানার সুযোগ করে দিচ্ছে সল্টলেক এজি ব্লক দুর্গাপুজো কমিটি। সল্টলেকের এই পুজো এবার ৩৭ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে। সংগীতের আদি ইতিহাসই এবার ফুটে উঠবে সল্টলেক এজি ব্লকের পুজো মণ্ডপে। থিমের পোশাকি নাম 'বহমান'। রাগকে ভারতী সংগীতের আত্মা বলা হয়। রাগই হল আধ্যাত্মিক এবং ইন্দ্রিয়গত দেবত্বের বহমানতা। রাগ দেবত্বের অনুভূতি নিয়ে বিস্তার লাভ করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ভারতীয় সঙ্গীতের উৎপত্তি সেই সময় যখন বেদ রচিত হয়েছিল। ভারতীয় প্রাচীন রাগগুলির সর্বশ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণা হল পুরুষ ও প্রকৃতি। পুরুষ আত্মা ও বিশুদ্ধ চেতনার প্রতীক। পুরষ শব্দের অর্থ মানুষ আর প্রকৃতি হল নারীর মাতৃরূপ। প্রকৃতি আক্ষরিক অর্থেই সৃষ্টিদাত্রী। পুজো উদ্যোক্তাদের মতে সাম বেদে দেবাদিদেবকে সংগীত ও প্রাচীন রাগগুলির জনক বলা হয়েছে। আরও অন্যান্য পৌরাণিক ব্যাখ্যা বলে যে, পুরুষ ও প্রকৃতির ঐশ্বরিক মিলন জন্ম হয়েছে সঙ্গীতের। মনে করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে সংগীত এবং স্থাপত্য একটি মহাজাগতিক সংযোগের দ্বারা নিবিড়ভাবে যুক্ত হয়েছে। সংগীত ও স্থাপত্য যখন একটি সরলীকৃত আকারে মিলিত হয় তখন তা মানুষের ভাবাবেগকে এক পরম উপলব্ধিতে উন্নীত করতে পারে সংগীত রূপে। আর সংগীতের এই আদি পর্যায় কে তুলে ধরেই, রাগ এবং স্থাপত্যের এই মহাজাগতিক সংযোগ ঘটাতে চলেছে সল্টলেকের এজি ব্লকের পুজো উদ্যোক্তারা।
হোগলা পাতা, মাটির কলসি, খেজুর গাছের ছাল, পেঁপে গাছের ছাল, বাঁশের চোচ ইত্যাদি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মাতৃ মূর্তিতেও থাকবে বিশেষ চমক। এবছর এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছে ক্লাবের মহিলা সদস্যরা। মহিলা পুরোহিত দ্বারাই পূজিত হবে মা দুর্গা। থাকবেন মহিলা ঢাকি। শিল্পী সুমি মজুমদার ও তাঁর স্বামীর সূক্ষ্ম হাতের কারুকার্যে এখন ফুটে উঠছে অনবদ্যই সৃষ্টি।  


বিজে ব্লক
সল্টলেকের আরও এক জনপ্রিয় পুজো হল বিজে ব্লকের পুজো। ৪০ বছরে পা দিল এই বছরের পুজো। পুজো কমিটির যুগ্ম সেক্রেটারি চিত্রা সরকার পুজোর থিম প্রসঙ্গে জানান, এ বছর বিজে ব্লকের থিম আদিযোগী। যেটা কোয়েম্বাটোরে রয়েছে, সদগুরুর আশ্রমে, সেটাই এবার বিজে ব্লকে তুলে ধরা হবে। শিব ঠাকুরের মূর্তি প্রধান মণ্ডপ, যেটা ফাইবারের তৈরি হচ্ছে। এটি ৬৫ ফিট উঁচু ও ৭০ ফিট চওড়া, দেউলটিতে এই মূ্তি তৈরি করছেন প্রায় ৩০ জন কারিগর মিলে। এর ভেতরেই মা দুর্গা থাকবেন। তবে এই পুজোর প্রধান আকর্ষণ আলোর কারুকার্য থাকবে গোটা মণ্ডপে। রাতের বেলা প্রধান আকর্ষণ সেটাই হবে। শিবের মূর্তি যেহেতু হচ্ছে ধূসর রঙের তাই সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। মায়ের এই মূর্তি গড়ছেন প্রদীপ রুদ্র পাল বলে জানিয়েছেন সেক্রেটারি। 
চিত্রা সরকার জানান, এই পুজোর বাজেট ৭০ লাখ। এই পুজো নিয়ে প্রচার চলাকালীনই কোয়েম্বাটোরের সদগুরুর আশ্রম থেকে লোক এসে পুজোর কাজকর্ম দেখে গিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে আদিযোগীকে নিয়ে থিম করার পরিকল্পনা কেন? যুগ্ম সেক্রেটারি জানান, করোনার পর থেকেই মানুষের ভাবনা, চিন্তা, মানসিকতা সব কিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। আর আদিযোগী কথাটার অর্থ প্রথম যোগ গুরু শিবঠাকুর, যিনি যোগরত অবস্থায় আছেন। এই থিমের মাধ্যমে যোগার গুরুত্বকে তুলে ধরা হবে, কারণ যোগাসনই হল মানুষের মানসিক ও শারীরিক সব দিক থেকে তাঁকে সুস্থ রাখার মূলমন্ত্র। ১৬ অক্টোবর এই পুজোর উদ্বোধন হবে। কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দিয়ে এই পুজোর উদ্বোধন করানোর ইচ্ছে রয়েছে বিজে ব্লকের। 
 

Advertisement

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement