বিজেপি সর্বভারতীয় দল এবং দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। সেই কারণে তিনি সেই দলে যোগ দিয়েছেন। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেননি। জানালেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। সিপিআইএম বা কংগ্রেসে কেন তিনি যোগ দেননি তাও পরিষ্কার করে দিলেন।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'মানুষের কাজ করার জন্য অনেক দল আছে। তবে আমার সঙ্গে বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও দলের মিলমিশ হল না। সিপিআইএম যেমন, ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না। আমি উপরওয়ালায় বিশ্বাস করি। আমি ভগবানে বিশ্বাস করি ও ধর্মপালন করি। হয়তো ভিতরে পালন করে তবে বাইরে করে না। ফলে আমার সঙ্গে সিপিআইএম-এর বেসিক্যালি কোনও মিলই হবে না। কংগ্রেস একটা পরিবারতান্ত্রিক দল। দলটা পরিবারবাদের সমর্থক। যেমন জয়রাম রমেশ। তিনি আইআইটির ছাত্র। তবে তাঁকে রাহুল গান্ধীর কথামতো ঘুরে বেড়াতে হয়। কেন হয় এটা জানি না। এই দলটা একটা রাজনৈতির পরিবারের দল। আর এছাড়াও আমি তাদের দলের পুরোনো নাম করা নেতা অতুল্য ঘোষের বই পড়েছি। সেই বইতে দেখেছি, কংগ্রেস দলের জমিদারি সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন।'
সাংবাদিক বৈঠক থেকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রকৃত রাজনীতিবিদ বলে মনে করেন। নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, 'তৃণমূলের সেনাপতি যাঁকে বলা হচ্ছে, তিনি তো তালপাতার সেপাই। তিনি যে কোন যুদ্ধে জিতেছেন কেউ জানে না। আমি কারও নাম করছি না। আমি তো এখানে কোনও কুকথা বলছি না। তাঁর নামটাকে আমি কুকথা বলে মনে করি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি প্রকৃত রাজনীতিবিদ বলেই মনে করি। আমার মনে হয়, উনি আর পাঁচজন রাজনীতিবিদের মতো একজন মাত্র।'
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, তিনি মনে করেন তৃণমূলে ভিতর ভিতর ভাঙন ধরেছে। সেটা কেন তারাই বলতে পারেবে। তৃণমূল কংগ্রেসের অপর নামই হল দুর্নীতি। রাজ্যের মানুষকে এই দল বঞ্চিত করছে। তাঁর কথায়, 'তৃণমূল কংগ্রেস একটা যাত্রাপার্টি। দলটা সম্পূর্ণ দুর্নীতিগ্রস্ত। এই দলই আমাকে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করেছে। রাজ্যের শাসকদল আমাকে ক্রমাগত আক্রমণ করেছে। বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।'
মঙ্গলবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদে ইস্তফা দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিভিন্ন মহলে জল্পনা ছড়িয়েছিল যে, বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। বিচারপতি হিসাবে পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিজেই সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন অভিজিৎ। মঙ্গলবার সকাল ১০টার কিছু সময় পর কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছন অভিজিৎ। তার পরেই রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগপত্র পাঠান বলে সূত্রের খবর। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেও পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন অভিজিৎ।