সন্দেশখালি কাণ্ডে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনের তরফে ওই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট কার্ডে দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারির কথা জানিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে তাঁর অভিমত, বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত করা হোক। বিচারবিভাগীয় তদন্তের কথাও বলেছেন রাজ্যপাল।
রিপোর্ট কার্ডে রাজ্যপাল উল্লেখ করেছেন- বহু আন্দোলনকারী মহিলা লিখিত এবং মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, তাঁদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। শেখ শাহজাহান, সুশান্ত সর্দার, শিবপ্রসাদ হাজরা, সঞ্জু সিং, রাজু সিং, শান্তনু বসু এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। তাঁদের উপর চলেছে যৌন নির্যাতন। মাছ চাষের জন্য জোর করে জমি নেওয়া হয়েছে। পুলিশের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে গ্রামবাসীদের। অভিযোগ নেওয়ার পরিবর্তে পুলিশ দুষ্কৃতীদের হয়ে কাজ করেছে। পুলিশ কর্মী সেজে রাতে নির্যাতিতাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।'
রাজ্যপাল সন্দেশখালিতে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে নিজের অভিজ্ঞতার কথাও উল্লেখ করেছেন রিপোর্ট কার্ডে। তাঁর মতে,'সন্দেশখালিতে ভেঙে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা নীরব। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মহিলাদের সম্মান ও আত্মমর্যাদার হানি করেছে অসামাজিক তত্ত্বরা। নির্যাতিতারা মনে করছেন, আইনভঙ্গকারীদের সঙ্গে আইনি এজেন্সিগুলির যোগসাজশ রয়েছে, যা সভ্য সমাজের পরিপন্থী।'
সন্দেশখালিতে কী করতে হবে, তাও বাতলে দিয়েছেন রাজ্যপাল। ৮ দফা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়,'সব দুষ্কৃতী ও তাদের সাগরেদদের গ্রেফতার করতে হবে। গঠন করতে হবে বিশেষ তদন্তকারী দল। বিচারবিভাগীয় তদন্তের কথাও বিবেচনা করা হোক। নির্যাতিতাদের ক্ষতিপূরণ দিক সরকার। রাজ্য মহিলা কমিশন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক। পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হোক। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা প্রশাসন আশ্বাস দিক। প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনতে যা যা করার দরকার তা করা হোক।' সবশেষে রাজ্যপাল মনে করিয়ে দিয়েছেন,'এটা পরস্পরকে দোষারোপের সময় নয়, বরং সবাই মিলে সমাজ থেকে হিংসাকে দূর করতে হবে।'