তৃণমূল বনাম তৃণমূলের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হুগলির বলাগড়। স্থানীয় বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর অভিযোগ তাঁর জিরাটের পার্টি অফিস ভাঙচুর করছে রুনা খাতুন। অন্যদিকে যুব তৃণমূল নেত্রী তথা জেলা পরিষদ সদস্য রুনা খাতুনও মনোরঞ্জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর, মনোরঞ্জন ও রুনার মধ্যে আদায় কাঁচকলার মতো সম্পর্ক। মনোরঞ্জনের অভিযোগ রুনা ও তাঁর স্বামী অরিজিৎ দুর্নীতিগ্রস্ত।
ফেসবুক পোস্টে মনোরঞ্জন লেখেন, 'সেই যে- বলাগড়ের ফুলন দেবী ! যে সাথে কুড়ি পঁচিশজন সার্ফ শুটার নিয়ে ঘোরে, যে আমাকে মহিপাল পুরে জনসভা করে মাটিতে পুঁতে দেবে বলেছে !' নাম না করলেও তিনি যে রুনা খাতুন-কেই ফুলনদেবী বলেছেন তা নিজেই bangla.aajtak.in-কে জানান মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
তিনি বলেন, 'রুনা খাতুন বলাগড়ের ফুলনদেবী। তাঁর জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এমনকী দলের নাম করে টাকাও তুলছেন ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী। আমি তার প্রতিবাদ করার কারণেই পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। আমার পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হবে তা জানিয়ে দেব সংবাদমাধ্যমকে।'
কিন্তু মনোরঞ্জন যাঁকে ফুলনদেবী বলছেন সেই রুনা আসলে কে ? রুনা খাতুন তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য। তিনি হাইস্কুলের শিক্ষিকা। স্বামীর নাম অরিজিৎ দাস। তাঁদের বিয়ে হয় ২০১৪ সালে। স্কুল জীবন থেকেই প্রেম অরিজিৎ ও রুনার। অরিজিৎকে বিয়েও করেন রুনা। রুনার দাবি, দুই পরিবারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান করে বিয়ে হয়। এখন তাঁরা সুখে সংসার করছেন।
মনোরঞ্জন ব্যাপারীর দাবি, অরিজিৎ ও তিনি দুজনেই তৃণমূল কংগ্রেস করেন। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। অরিজিতের পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। ভেসেলের কারখানা আছে তাঁর। তিনি এলাকার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। সেটা পার্টিতে আসার আগে থেকেই।
মনোরঞ্জনের অভিযোগ, অরিজিৎ কোটি কোটি টাকার মালিক। তার তদন্ত হওয়া দরকার। কীভাবে সেই টাকা-কোথা থেকে এল তা মানুষের জানা দরকার। এদিকে রুনার পাল্টা দাবি, অরিজিৎ বনেদি বড়লোক। তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে বদনাম করার জন্য মনোরঞ্জন মিথ্যা অপপ্রচার করছেন।
যদিও তাঁর নামে যে মিথ্যে বা অপপ্রচারের অভিযোগ রুনা করেছিলেন, মনোরঞ্জন সেই ফেসবুক পোস্ট ডিলিট করে দেন। পরে তিনি জানান, এই পোস্ট করেই তিনি ভুল বুঝতে পারেন। রুনা যদিও অভিযোগ প্রত্যাহার করবেন না বলেই জানিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, 'মনোরঞ্জন ব্যাপারীর শিক্ষা নেই। তিনি আমাকে যে ভাষার আক্রমণ করেছেন তা মুখেও আনতে পারব না। বিধায়ক বলেই যা খুশি করবেন এমনটা হতে পারে না।'