মেয়েদের রাত দখল নিল কারা? বুধবার আরজি করের সামনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হঠাৎ পরিণত হল রণক্ষেত্রে। অভিযোগ, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎই আন্দোলনের মাঝে ৩০-৩৫ জনের একটি দল হাসপাতালে প্রবেশ করে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে মাথা ফাটল কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরও।
ঠিক কী ঘটল?
এদিন রাত দখলের ডাকে ১০টা থেকেই হাজার-হাজার মানুষ আরজি কর মেডিকেল কলেজের সামনে জড়ো হন। রাত ১১টার পর থেকে ভিড় আরও বাড়তে থাকে। ১২টা, ১২.১৫ পর্যন্ত পরিস্থিতি তবুও নিয়ন্ত্রণেই ছিল। শান্তিপূর্ণভাবেই গান, স্লোগানিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন সকলে।
হঠাৎই তাল কাটল সাড়ে ১২টা নাগাদ
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎই তুমুল উত্তেজনা শুরু হয়। ৩০-৩৫ জন হঠাৎই হাসপাতালের সামনে পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড নাড়িয়ে ভাঙতে শুরু করে। এরপর হুড়মুড়িয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে শুরু করে তারা। ঘটনার আকস্মিকতায় পুলিশও হকচকিয়ে যায়।
ভাঙচুর
দেখা যায় একদল বিক্ষোভকারী এসে চিকিৎসকদের আন্দোলনের যে মঞ্চ, সেখানে ভাঙচুর শুরু করে। অন্য়দিকে এদের একাংশকে চেয়ার , ব্যারিকেড ভাঙতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি একটি অংশ গিয়ে এমার্জেন্সি গেটের সাইন ভাঙতে শুরু করে। টব, মই নিয়ে এসে ভেঙে ফেলা হয় এমার্জেন্সি ওয়ার্ডের কোলাপসিবল গেট। এরপর ভিতরে ঢুকে তছনছ, ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। একাধিক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের দাবি, তাদের ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদেরও তাড়া করা হলে তাঁরা হাসপাতালের অন্য অংশে আশ্রয় নেন।
পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর
এরপর বিক্ষোভকারীদের এই অংশ গিয়ে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একের পর এক পুলিশের গাড়ি, মোটরসাইকেল ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়। এমনকি পুলিশ লেখা একটি সাদা গাড়ি উল্টে দেওয়া হয়।
নামল ব়্যাফ
এরপরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামে বড় পুলিশ বাহিনী। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। এদিকে কাঁদানে গ্যাস, পুলিশ-হামলাকারীদের তাড়ায় অন্য প্রতিবাদী আন্দোলনকারীরাও সেখান থেকে দৌড়ে চলে যেতে শুরু করেন। রীতিমতো রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়। দেখা যায় বিক্ষোভ-হামলাকারীদের কেউ কেউ পুলিশের দিকে ইট ছুঁড়তে শুরু করে। এই সময়েই এক পুলিশ আধিকারিকের চোখের ওপরে কপাল ফেটে যায়। পুলিশ একাধিকজনকে আটক করেছে বলে খবর।
ধন্ধুমার পরিস্থিতি
শ্যামবাজার, কলকাতা স্টেশনের দিকে, বেলগাছিয়াগামী রাস্তায় ক্রমেই এগিয়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শুরু করে ব়্যাফ।
পৌঁছলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল
ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছলেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল। এরপর তাঁর নেতৃত্বে পুলিশকর্মীরা ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভিড়কে সরিয়ে দেন।