সম্প্রতি দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে(Ranjan Gogoi) নিশানা করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ (TMC MP)মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। এবার India Today Conclave East 2021-এ যার পাল্টা দিলেন গগৈ। কী বললেন রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্য়সভার সাংসদ ?
এদিন মহুয়া মৈত্রের বক্তব্যে দেশের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বললেন, 'আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ যারা করছে, তারা আমার নাম নিতে কেন ভয় পায়? ভারতে লোকজন বিনা তথ্যেই অভিযোগ তোলেন। আইনে ভরসা নেই।' সম্প্রতি সংসদে মহুয়া বলেন, বর্তমানে পবিত্র বিচারব্য়বস্থা এখন আর সম্মানীয় নয়। যেদিন থেকে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিরা নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিজেরাই ট্রায়াল করছেন, সেদিন থেকেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা নিজেদের ট্রায়াল নিজেরা করেই দোষমুক্ত হন। এমনকী অবসরের পরে রাজ্য়সভায় মনোনয়ন নিশ্চিত করে জেড ক্যাটিগরির নিরাপত্তা পান। সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলি থেকে সরে আসায় আজ আর বিচার ব্য়বস্থা পবিত্র নেই। মহুয়ার এই মন্তব্য়ের পরই সংসদে ঝড় ওঠে। এদিন মহুয়ার সেই বক্তব্য়ের পাল্টা দেন গগৈ।
এই বলেই অবশ্য় থেমে থাকেনি তার ভাষণ। দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, 'যে ভাবে সরকারি অফিসার নিয়োগ করা হয়, সেই ভাবে বিচারক নিয়োগ করা যায় না। একজন বিচারকের বিচারব্যবস্থার প্রতি কমিটমেন্ট থাকতে হবে। এটা ২৪ ঘণ্টার দায়িত্ব। এটা ১০ টা থেকে ৫টার কাজ নয়। যারা এইখানে আসবেন, তাঁদের মনে করতে হবে এটা দেশের প্রতি তাঁদের দায়িত্ব।''
তাঁর মতে, ''এখন সিস্টেম ঠিক চলছে না। বিচারক নিয়োগ পদ্ধতিটা বিচারব্যবস্থার ওপর থাকাই ভালো। যেখাবে বিচারক নিয়োগ করা হয়, সেটা নিয়ে ভাববার দরকার আছে। কারণ পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে তারা কী পড়ে সেটা আমরা জানি। কীভাবে মানুষকে বিচার দিতে গিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়, তা তাদের জানা উচিত।
অনেকে বলছেন, রাম জন্মভূমি রায় মোদী সরকারের বিরাট সাফল্য। কিন্তু একটা বিষয় তো বলতে হবে, আদালতের বিচার কোনও না কোনও পক্ষকে খুশি করে, আবার কোনও পক্ষকে দুঃখী করে। আরে বিচারব্যবস্থাকে সম্মান করতে হবে। আমি আগেও বলেছি, দর কষাকষি করে কোনও রায় দিইনি। আমি কখনও রাজ্যসভার সাংসদ হতে চাইনি।''
এদিন NRC নিয়েও মুখ খোলেন গগৈ। তিনি বলেন, 'অসমে একটি বইয়ে বলা হয়েছে, এনআরসি হল বড় খেলা। এক রাজনীতিবিদ লিখেছেন। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বলা হচ্ছিল, আমরা তোমাদের রক্ষা করব, আমাদের ভোট দাও। আর এক দল বলছে, আমি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াবো। আসলে এই হল খেলা।'