যাদবপুরে পড়তে আসা স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুর পর থেকেই উত্তাল গোটা ক্যাম্পাস। ‘আমরা বিচার চাই’, লেখা প্ল্যাকার্ড পোস্টারে ভরে গেছে ক্যাম্পাস। ঘটনায় সৌরভ চৌধুরী নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবারই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু। সেই অভিযোগপত্রে তিনি খুনের অভিযোগ করেছিলেন। এই ঘটনা নিয়ে শনিবার 'বাংলা ডট আজতক ডট ইনে' মুখ খুললেন যাবদপুরের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, তাঁর সময়েই উত্তাল হয়েছিল গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। 'হোক কলরব' নামে একটি আন্দোলন শুরু হয়েছিল। অভিজিৎ চক্রবর্তী বললেন, 'আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল আমায় সরানো। কারণ আমি যাদবপুরের ভালো চেয়েছিলাম। যাদবপুরে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিলাম। হাইকোর্টও সায় দিয়েছিল। চেয়েছিলাম শুধু পড়ুয়ারাই ক্যাম্পাসে ঢুকুক। নেশার আখড়া বন্ধ হোক। যেকারণেই আমায় সরানোর জন্য আন্দোলন শুরু হয়। ওই আন্দোলনে রাজনৈতিক মদত ছিল।'
স্বপ্নদীপের পরিণতি নিয়ে মর্মাহত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। তিনি যাদবপুরের পর শিবপুর আইআইটি-র দায়িত্বও পালন করেছেন দীর্ঘদিন। এখন অবসর নিয়েছেন। তিনি বললেন, 'যাদবপুরের নৈরাজ্য বন্ধ করতে চেয়েছিলাম। আমার প্রস্তাব ছিল, সব পড়ুয়া গেটে পরিচয় পত্র দেখিয়ে ঢুকবে। বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কারণ দেখা গেছে. বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাইরের ছেলে-মেয়েরা এসে যাদবপুরে ঝামেলা পাকিয়েছে।'
অভিজিৎবাবুর দাবি, তিনি নেশা বন্ধ করতে ক্যাম্পাসে সার্চ লাইট লাগিয়েছিলেন। সিসি ক্যামেরা লাগাতে চেয়েছিলাম। মেইন হস্টেলের বাইরেও সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। বিষয়টিতে তিনি বলেন, 'এমনকি আমি হস্টেলগুলিতে নিজে যেতাম। পরিস্থিতি দেখতাম। আমি যা চেয়েছিলাম, তা করতে দেওয়া হলে স্বপ্নদীপের মৃত্যু হত না।'
প্রাক্তন উপাচার্য এখনও চান যাদবপুরের ভালো হোক। পড়ুয়ারা ভালো থাকুক। তবে তিনি এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত সে নিয়েও বলেন। তাঁর কথায়, 'ভীষণ টাফ হতে হবে। নরম হলে চলবে না। কাউকে ছাড় দিলে চলবে না। চার নম্বর গেটের বাইরে পুলিশ পোস্ট বসাতে চেয়েছিলাম। এখনও বসানো উচিত। যাতে ক্যাম্পাসে কেউ বিপদে পড়লেই পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে। অধ্যাপকদের একটা লবি রয়েছে। তাঁদেরকেও বোঝাতে হবে। পড়ুয়াদের স্বার্থে সবাইকে সঠিকটা মেনে নিতে হবে। বাইরের লোকের জন্যই যাদবপুরের এই দশা। ভেতরের নিরাপত্তারক্ষীদেরও ভয় দেখানো হয়। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তবেই তাঁরা যাদবপুরকে নির্ভয়ে আগলে রাখবে।'