রাজনীতিতে কি সত্যিই আসবেন? জল্পনা জিইয়ে রাখলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এখনও বিচারপতির পদ ছাড়েননি তিনি। তবে মঙ্গলবার বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানালেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, 'সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে আমার শেষদিন। আমার এজলাসে কতগুলো মামলা আছে। সেগুলো পার্টহার্ড ম্যাটার আছে। সেই সব মামলাগুলোকে আমার লিস্টের বাইরে করে দেব। তারপর আমি কলকাতা হাইকোর্টের চিফ জাস্টিসকে আমি মৌখিকভাবে জানাব। পরশুদিন আমি দেশের রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে জানাব। যে মুহূর্তে চিঠি লিখব, সেই মুহূর্ত থেকে আমার পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে। কারণ এটাই আইন, নিয়ম।'
তারপরই সাংবাদিকরা বিচারপতিকে প্রশ্ন করতে থাকেন, তিনি কি রাজনীতিতে যোগ দেবেন? কোন দলের হয়ে দাঁড়াবেন? লোকসভা ভোটের আগে কেন এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন? তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী ? এই সব প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তিনি এসব কোনও প্রশ্নের উত্তর দেবেন না। যা বলার মঙ্গলবার বলবেন।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আমি যা উত্তর দেব সব মঙ্গলবার। এখন কোনও উত্তর দেব না। আপনারা দয়া করে সব প্রশ্ন রাখুন। আমি সব উত্তর দেব। পদত্যাগের পর সব উত্তর দেব। দেশের প্রধান বিতারপতি ও রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখব। আমি এখন কোনও প্রশ্নের উত্তর দেব না। আমি মিডিয়ার কাছে ঋণী। আমি মিডিয়াকে প্রণাম জানাতে চান। আমি মিডিয়ার কাছ থেকে কোনওকিছু লুকোতে চাই না। আমি পশ্চিমবঙ্গের ও সর্বভারতীয় মিডিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়েছেন। মাস্টারদার যে ফাঁসির অর্ডার হয়েছিল, তা দিয়েছিলেন এই কোর্টের এক ইংরেজ বিচারপতি। তবে মাস্টারদার ফাঁসির আগেই মৃত্যু হয়। যেটুকু জানা যায়। ক্ষুদিরামের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার হয়েছিল। টোকিও ট্রায়ালে রাধাবিনোদ পাল বলেছিলেন, মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ফাঁসি দেওয়া যায় না। সেই কারণে,আজও রাধাবিনোদ পালের মূর্তি আছে। সেই জন্যই আমি মাস্টারদার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে যা বলার বলব।'
কুণাল ঘোষের প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'কুণাল ঘোষকে আমার ভালো লেগেছে। রাজনীতি নিয়ে আমার সঙ্গে তাঁর কথা হয়নি। তবে শিল্প-শিক্ষা-সংস্কৃতি নিয়ে কথা হয়েছে। উনি সাংসদও ছিলেন। রাজনীতিবিদ হিসেবে হয়তো উনি আমাকে অনেক কথা বলেছেন। সেগুলো নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। তবে ব্যক্তি কুণাল ঘোষকে আমর ভালো লেগেছে।'
বিচারপতি সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে আরও বলেন, 'আমি জানি আমাকে ভগবান বলেছেন অনেকে। আমি সাধ্যমতো মানুষের জন্য কাজ করেছি। বাঙালি ইমোশনে চলে। তারা আবেগের বশবর্তী হয়ে আমাকে ভগবান বলেছেন। তবে আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।'