পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে মুখ্য়মন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করে খোলা চিঠিও দিয়েছিলেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো ব্যক্তিত্বরা। বুধবার প্রেস ক্লাবে পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করলেন কবীর সুমন-সহ তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। তাঁরা রাজ্য সরকারের একাধিক কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন। অভিনেত্রী অপর্ণা সেনদের 'এই পরিবর্তন চাইনি' মন্তব্যকে খোঁচা দিয়ে কবীর সুমনের পাল্টা মন্তব্য, 'সাদা থানের কথা ভুলে যায় কী করে? বলতেই পারেন এই পরিবর্তন চাইনি, কিন্তু কী চেয়েছিলেন? সেটা তো স্পষ্ট করে বলুন। আমি চাই ৩ হাজার বছর মমতা ক্ষমতায় থাকুন।'
কবীর সুমনের বক্তব্যে উঠে আসে রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের কথা। রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে তিনি বলেন, 'বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। মমতার আমলে কলকাতা শহরের যে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে, তা নজরে পড়ে? আগে তো অনেক রাস্তায় হাঁটতে গেলে নাকে রুমাল চাপা দিতে হত। এখন তো সে অবস্থা নেই। ইতিবাচক দিকগুলোও দেখা উচিত। রাজ্য তো কাজও হচ্ছে, শুধু কি আর মারামারি কাটাকাটি হচ্ছে?'
এদিন 'সময়ের ডাকে' শিরোনামে সাংবাদিক বৈঠক করেন কবীর সুমন, আবুল বাশার, যোগেন চৌধুরী, নাট্যকার অর্পিতা ঘোষ সহ আরও অনেকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা নিয়ে তাঁরা আরও বলেন, 'মমতাকে সহ্য করতে পারছেন না অনেকেই। তার নিশ্চয় কারণ আছে। ভোটে তো গোলমাল হবেই। ভোট করাতে হয়। নল দিয়ে ভোট হয়, যেদিন থেকে বোধবুদ্ধি, সেদিন থেকেই দেখছি। এছাড়াও তৃণমূল কর্মীরা সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন।'
পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যের সর্বত্র যে হিংসার ছবি দেখা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মূলত সেটাকেই নিশানা করে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেন অপর্ণা সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টরা। ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উদ্দেশ্য করে লেখা হয়, '৮ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত ৩৭ দিনে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৫২ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এই দায়িত্ব আপনি কোনও ভাবেই অস্বীকার করতে পারেন না। রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে যে বেলাগাম সন্ত্রাস, খুনোখুনি হয়েছে, প্রশাসন তার দায় অস্বীকার করতে পারে না। পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে বাংলায় হওয়া এই হত্যালীলা, অরাজকতার জন্য নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্বের পাশাপাশি রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে দায় নিতে হবে। কারণ, স্থানীয় প্রশাসনের ওপর নির্ভর করেই কেন্দ্রীয় বাহিনী আর নির্বাচন কমিশনকে ভোটপর্ব চালাতে হয়।'