বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে কলকাতার বহু জায়গায় জল জমেছে। সেই জল নামতে অনেক সময় লেগেছে। জল জমার একাধিক অভিযোগ পেয়েই শুক্রবার 'টক টু মেয়র' পোগ্রামে উপস্থিত আধিকারিকদের উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রকাশ্যেই তিনি বলেন, ‘‘আধিকারিকরা কোনও কাজ করেন না। ঘরে বসে থাকেন। আর এলাকায় এলাকায় জল জমে থাকে। আমাদের মিথ্যে রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এলাকা না ঘুরে এসেই বলেন কাজ হয়ে গিয়েছে। আমাকে তারকদা (মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ) হোয়াটস অ্যাপ করে কোথাও জল জমে নেই জানান। কিন্তু আমি অভিযোগ পাচ্ছি, জল জমে রয়েছে। আধিকারিকরা কি করছেন?’’
এরপরেই সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে জমা জল প্রসঙ্গে মেয়রের ক্ষোভ প্রকাশের পর তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলে তারক বলেন, ‘‘ওঁর (মেয়র) কথায় আমি অসম্মানিত হয়েছি। মেয়রের আমার উপর আস্থা নেই। তাই আমি পদত্যাগ করব।’’
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের আত্মীয়ের মৃত্যুতে মোমিনপুরে পিসির বাড়িতে গিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। সেখানে পৌঁছে দেখেন জল থই থই। মেয়রের অভিযোগ, ‘‘জল জমা নিয়ে ভুল রিপোর্ট আসছে। আমাকেই গতকাল বলা হল, খিদিরপুরে কোথাও জল জমে নেই। এদিকে আমার ভাই কাল মারা গিয়েছে। মোমিনপুরে পিসির বাড়িতে গিয়ে দেখি সেখানেই জল থৈ থৈ। অবস্থা এমনই মৃতদেহ মাটিতে রাখা যাচ্ছে না।’’
শুধু নিকাশি নয়, ডায়মন্ড হারবার রোড নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছেন মেয়র। যাঁরা কাজ করেছে সেই কন্ট্রাক্টরদের কালো তালিকাভুক্ত করতে বলেছেন তিনি। মেয়রের হুঁশিয়ারি, এক দু’জনকে কালো তালিকাভুক্ত করলেই বাকিরা সাবধান হবে। এদিন প্রথম তাল কাটে একটি ফোনে। কলকাতা পুরসভার ১২৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মেয়রের কাছে জল জমার অভিযোগ করেন সুজয় বিশ্বাস। বেহালা সি ১৮/২০ আনন্দনগর, দক্ষিণ বেহালা রোডের বাসিন্দা জানিয়েছেন, রাস্তায় বৃষ্টির জল জমে রয়েছে।
ক্ষুব্ধ মেয়র বলেন, সংযোজিত কলকাতার সমস্যা কেন মিটছে না। যেখানে জল জমে সেখানে কাজ চলছে কেইআইপির। ক্ষুব্ধ মেয়র এদিন কেইআইপি-র আধিকারিকের কাছে জানতে চান, আপনাদের ইঞ্জিনিয়াররা কি করছে? তারা কেন শহর ঘুরে দেখছে না ? জল জমা ঠেকাতে আপ্রাণ পরিশ্রম করছেন মেয়র। তারপরেও শহরের জলছবিতে বিরক্ত তিনি। এদিন তাঁর স্বগতোক্তি, ‘‘আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই। কেউ কোনও কাজ করছে না। ভুল তথ্য দিচ্ছে।’’ মেয়রের কথায়, সরকারি কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা তা ঢিমেতালে হয়। এই ধারণা অবিলম্বে বদল করতে হবে।