রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ফের কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার আন্দোলনরত চিকিৎসকরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাঁদের মোট ১০ দফা দাবি রয়েছে, যা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি চিকিৎসক ছাত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নিয়ে বিভ্রান্তির অভিযোগও তুলেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকদের অভিযোগ: পোস্টমর্টেম নিয়ে বিভ্রান্তি
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দাবি, আরজি কর কাণ্ডে মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁরা প্রথমে খবর পান, কর্মক্ষেত্রে এক সেকেন্ড ইয়ার পিজিটি চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরে তাঁরা জানতে পারেন এটি নারকীয় ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা। এ কারণেই তাঁরা দাবি করেছিলেন, পোস্টমর্টেম প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হোক। কিন্তু তাঁদের সেই দাবি উপেক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা আরও জানান, তাঁরা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা এখনও দেখানো হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টেও উঠেছে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের প্রসঙ্গ
সোমবার সুপ্রিম কোর্টেও আরজি কর ঘটনার শুনানি হয়। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের কাছে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং ছবির প্রকাশ বন্ধ করার আবেদন জানান। যদিও প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ছবির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য শুনানি প্রয়োজন।
জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণ
শুক্রবার রাতে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজে রোগীর পরিজনদের হাতে প্রহৃত হন বেশ কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসক। অভিযোগ, ওই সময় এক মহিলা চিকিৎসককে ‘আরজি কর করে দেওয়ার’ হুমকি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা প্রথমে কর্মবিরতি শুরু করেন। শনিবার স্বাস্থ্যসচিবসহ প্রশাসনের কর্তারা বৈঠক করলেও আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা প্রশাসনকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন।
১০ দফা দাবি পূরণ না হলে চলবে কর্মবিরতি
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী, সোমবার বিকেলের মধ্যে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করা হলে তাঁরা পূর্ণ কর্মবিরতিতে নামবেন বলে জানিয়েছিলেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির পরেই চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।