কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক-ছাত্রীর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর গোটা দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভয়াবহ ঘটনায় বিশাল সংখ্যক মানুষ তাদের ক্ষোভ ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু, এদিকেই কিছু দুর্বৃত্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবির মাধ্যমে আগুনে ইন্ধন যোগাচ্ছে।
ভুয়ো দাবির বিস্তার
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। একটি মিথ্যা দাবির মধ্যে বলা হয়েছে যে, এক চিকিৎসককে ধর্ষণ করা হয়েছে যখন তিনি আরজি কর হাসপাতালে প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করে ফিরে আসছিলেন। এই মিথ্যা তথ্যের সঙ্গে একটি ফটোশপ করা ছবি এবং ভুয়ো নাম ব্যবহার করে দাবি করা হয় যে, ওই ছাত্রীর মুখ পাথর দিয়ে পিষে ফেলা হয়েছে এবং তাঁর গলা কাটা হয়েছে। এই পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে, বিশেষ করে ইনস্টাগ্রাম ও X-এ।
প্রভাব এবং ছড়িয়ে পড়া
গুগল ট্রেন্ডসের তথ্য অনুযায়ী, "কলকাতা ডাক্তার কেস ফুল স্টোরি" শব্দটি গত ছয় দিনে ২০ লাখেরও বেশি বার অনুসন্ধান করা হয়েছে। ভিকটিমের ছবি ও ভিডিও দুই লাখেরও বেশি বার সার্চ করা হয়েছে। এই ধরনের ভুয়ো দাবির ফলে অনেক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং ঘটনাটির প্রকৃত গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
পুলিশি পদক্ষেপ
ভুয়ো তথ্য ছড়ানো এবং বিভ্রান্তি তৈরির বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। পুলিশ ২৮০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে এবং ২ জনকে গ্রেফতারও করেছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এই ধরনের ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। এছাড়া, কিছু সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যারা এই ভুয়ো দাবি ছড়াচ্ছিল।
সামাজিক মিডিয়ার দায়িত্ব
এই ঘটনা প্রকাশ করে যে কিছু ব্যক্তি জনগণের ক্ষোভ ও দুঃখকে নিজেদের স্বার্থের জন্য কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। ইনস্টাগ্রামে চিকিৎসক ধর্ষণ কেসের নামে অসংখ্য ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে, যা সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
কলকাতার শিক্ষানবিশ ডাক্তার ধর্ষণ মামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ও মিথ্যা দাবির বিস্তার সমাজে আরও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক তথ্য পরিবেশন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।