নতুন বিধায়দের শপথ নিয়ে কিছুদিন ধরেই চাপানউতোর চলছে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টিতে মন্তব্য করেছেন। তাঁর সেই মন্তব্যের ভিত্তিতে শুক্রবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিল রাজভবন। এদিন রাজভবনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নবনির্বাচিত বিধায়কেরা রাজ্যপালকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা চান, তাঁদের শপথ গ্রহণ বিধানসভাতেই হোক। তার প্রেক্ষিতে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বিধানসভায় স্থানান্তরিত করার ব্যাপারে ভাবনা চিন্তাও করছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন যে, রাজভবনে মহিলারা যেতে নিরাপদ বোধ করছেন না। রাজভবনের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, নতুন বিধায়কদের রাজভবনে না-যাওয়া নিয়ে কোনও বক্তব্য ছিল না।
তৃণমূলের দুই সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক রায়াত হোসেন সরকার এবং সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ নিয়েই মূলত বিতর্ক চলছে। জটিলতা কাটাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিয়েছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিতে বলেন, ‘আমার বিধায়কেরা এক মাস ধরে বসে আছেন। মানুষ নির্বাচন করেছে। ওঁর কী অধিকার আছে? রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আমাকে।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের কড়া নিন্দা করা হয়েছে রাজভবনের বিবৃতিতে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২১ জুন দুই সদ্য নির্বাচিত বিধায়ককে জানানো হয় যে, ২৬ জুন দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজভবনে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তার পর ২৪ জুন রাজ্যপালকে সায়ন্তিকা জানান, বিধানসভার স্পিকারের সামনেই তিনি শপথ নিতে চান। শপথ গ্রহণ যাতে বিধানসভায় হয়, তা নিশ্চিত করার অনুরোধও করেন।
এরপর ২৫ জুন রাজভবনের তরফে সায়ন্তিকাকে জানানো হয় যে, সাংবিধানিক নিয়ম ও দস্তুর মেনে রাজ্যপালের সামনেই শপথ নেওয়া জরুরি। ওই দিনই সায়ন্তিকা ফের রাজ্যপালের কাছে সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ করেন। চিঠিতে অনুচ্ছেদ ১৮৮-এর উল্লেখ করে বিধানসভায় শপথ অনুষ্ঠান চান তিনি।
এর পর ২৬ জুন রাজভবনে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাজ্যপাল অপেক্ষাও করেন। কিন্তু কেউ না আসায় তিনি দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নবনির্বাচিত বিধায়কদের অনুরোধের পর তাঁদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে শপথ অনুষ্ঠান স্থানান্তরিত করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করছিলেন। ঠিক সেই সময় জানা গেল মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন— মহিলারা রাজভবনে যেতে নিরাপদ বোধ করছেন না।’