Kolkata Hostel Murder case: মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে শুক্রবার মধ্য কলকাতার বউবাজার এলাকায় একটি সরকারি ছাত্রাবাসে একজনকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই হস্টেলে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক ক্রিকেট ব্যাট এবং লাঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেগুলি দিয়েই যুবককে মারধর করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে শুক্রবার সকালে হস্টেলের ভিতরে ঠিক কী কী ঘটেছিল, বিশদে তদন্ত করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম ইরশাদ আলম (৩৭)। তিনি বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। চাঁদনিচক এলাকায় একটি ইলেকট্রনিক্স দোকানে মেকানিকের কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। ইরশাদ এর আগে একটি টেলিভিশন মেরামত করতে উদয়ন হোস্টেলে গিয়েছিলেন, এবং গত কয়েকদিন ধরে কিছু মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়ার পরে, আজ সকালে তাকে আবার হোস্টেলে ডাকা হয়েছিল, একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একটি মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে, তাকে বেঁধে মারধর করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার জানিয়েছে।
ইরশাদের এক আত্মীয় পুলিশকে জানিয়েছেন, "তিনি আমাদের হোস্টেল থেকে ডেকে বলেছিলেন যে ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করার পর টাকা দাবি করছে।" ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ছাত্রাবাসে পৌঁছে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে। তাঁকে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে যে তাঁরা ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং মুচিপাড়া থানায় আইপিসি ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), 365 (অপহরণ) এবং 302 (খুন) এর অধীনে মামলা দায়ের করেছে। "একটি তদন্ত চলছে," অফিসার বলেন, গ্রেফতার অভিযুক্তরা শহরের বিভিন্ন কলেজের বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্র।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বেশির ভাগের বয়স ২২ থেকে ২৪ বছর। দু’-এক জন ২৭- ২৮ বছরের যুবকও রয়েছেন তাঁদের মধ্যে। তাঁরা কেউ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কেউ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা সংস্কৃত কলেজের ছাত্র। প্রেসিডেন্সি এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীও রয়েছেন ধৃতদের তালিকায়। ধৃতেরা ঝাড়গ্রাম, নদিয়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং কোচবিহারের বাসিন্দা। সকলেই পড়াশোনার সূত্রে কলকাতায় এসেছিলেন।
বৌবাজারের ওই হস্টেলের সামনে একটি কেকের দোকান রয়েছে। সেখানে সিসি ক্যামেরাও রয়েছে। শুক্রবার তার ফুটেজ দেখতে দোকানে গিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন ওই দোকানে গিয়েছিলেন অভিযুক্তদের কয়েক জনও। কেন ওই দোকানে তাঁরা গিয়েছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।