আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। এই ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সঞ্জীব ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । বিশেষ করে চিকিৎসকদের একাংশ তথা প্রতিবাদীদের তরফ থেকে হাসপাতালে এই দুর্নীতিচক্রের অভিযোগ তোলা হচ্ছিল। তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর থেকে সিবিআই সঞ্জীব ঘোষকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতেই আরজি করের দুর্নীতির তদন্ত করতে চার সদস্যের সিট গঠন করল নবান্ন ।
সোমবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে চার সদস্যের সিট গঠনের কথা জানান হয়েছে । এই সিটের শীর্ষে রয়েছেন স্বামী বিবেকানন্দ পুলিশ অ্যাকাডেমির দায়িত্বে থাকা আইজি প্রণব কুমার । এছাড়াও থাকছেন ডিআইজি মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ ওয়াকার রাজা, ডিআইজি সিআইডি সোমা দাস মিত্র ও কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। হাসপাতালে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করতে এই বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। একটি নির্দেশিকা জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্তে একটি সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে ওই বিশেষ তদন্তকারী দল সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সকল সরকারি দফতরের এবং বেসরকারি এজেন্সির নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখতে পারবে। তদন্তকারী দলের মাথায় থাকছেন রাজ্য পুলিশের আইজি প্রণব কুমার। তাঁর সহকারী হিসাবে কাজ করবেন মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি ওয়াকার রেজ়া, রাজ্য সিআইডির ডিআইজি সোমা দাস মিত্র এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। তদন্তের স্বার্থে ওই দল আবার পুলিশের যে কোনও অফিসার, কর্মীর সাহায্য নিতে পারবেন। সিট গঠনের এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তদন্তের গতিপ্রকৃতি সংক্রান্ত প্রথম রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশিকায় যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে সেই সময় আরজি করের অধ্যক্ষের ভূমিকা পালন করেছেন সন্দীপ ঘোষ। ফলে, তদন্তের স্বার্থে তাঁকেও জেরা করার সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে আজ পর্যন্ত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ উঠেছে তাঁর তদন্ত করতে হবে। এর আগে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নামে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিট গঠন করেছে সরকার, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।