জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় এফআইআর হল। তবে এবার ৫ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে তাঁরা হলেন-নীলাদ্রি শেখর দানা, দীপক বর্মণ, মনোজ টিগ্গা, শঙ্কর ঘোষ ও সুদীপ কুমার মুখার্জী। এর আগে একই অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ ১২ জনের নামে এফআইআর করা হয়।
২৯ নভেম্বর বুধবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে কালা দিবস পালনের ডাক দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। বিধানসভায় সমস্ত তৃণমূল বিধায়করা কালো পোশাক করে যান। কালো পাড়ের শাড়ি পরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে বিধানসভা চত্বরে আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশে ধর্না চলছিল তৃণমূলের। উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর নাম করে চোর চোর স্লোগান দিতে থাকেন শাসক দলের বিধায়করা। অমিত শাহের সভা সেরে আচমকা বিধানসভায় যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অন্য বিজেপি বিধায়করাও। তৃণমূলের ধর্না লক্ষ্য করে শুভেন্দু 'চোর চোর' স্লেগান দেন। মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে চোর চোর স্লোগান দিতে থাকেন বিরোধী দলনেতা। এর পর বিধানসভার মূল প্রবেশদ্বারের মুখে বসে পড়েন শুভেন্দু-সহ অন্য বিজেপি বিধায়করা। তৃণমূলের মুখোমুখি বসে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। পাল্টা তৃণমূলের তরফেও ওঠে 'চোর' স্লোগান। চোর, চোর স্লোগানে ভরে যায় বিধানসভা চত্বর। তৈরি হয় চরম উত্তেজনার পরিস্থিতি।
উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে শেষ পর্যন্ত লালবাজারের বিশাল বাহিনী বিধানসভায় যায়। তৃণমূলের দাবি, বুধবার ধর্নায় বসে তাঁদের বিধায়করা যখন জাতীয় সঙ্গীত গাইছিলেন, সেইসময় স্লোগান দিয়ে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছে বিজেপি। এনিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে অভিযোগও জানানো হয়। পরবর্তীকালে, বিধানসভার সেক্রেটারি সুকুমার রায় অভিযুক্ত বিজেপি সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেন। এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এটি একটা বেআইনি এফআইআর, আমরা এই এফআইআর বাতিল করতে আদালতে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং এফআইআর দায়ের করেছেন। আমরা একটি জাতীয়তাবাদী দল এবং আমরা আদালতে চ্যালেঞ্জ করব।'
এদিকে, আজ তৃণমূলের তরফে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার জন্য বিজেপির ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়। এক্স হ্যান্ডেলে ভিডিও পোস্ট করে লেখা হয়েছে, 'অমিত শাহের ফ্লপ শো থেকে মনোযোগ সরাতে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা জাতীয় সঙ্গীতের অসম্মান করেছেন। সেটাও ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। তবুও, একজনও ক্ষমা চাননি। এখানে আরও একটি প্রমাণ রয়েছে যে কীভাবে দেশবিরোধী বিজেপি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর উস্কানিমূলক নীতিহীন রাজনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল। মাননীয় অমিত শাহ আপনার ফ্লপ ইভেন্টের ঠিক পরেই কি বিজেপি নেতাদের এই ক্ষমার অযোগ্য পাপ করতে প্ররোচিত করেছিল? জবাবের জন্য অপেক্ষা করছি।'