নিউটাউনের সাপ ধরে নিয়ে যাচ্ছে বন দফতরের কর্মীরা। ছাড়া হচ্ছে দূরের জঙ্গলে। স্মার্ট সিটি নিউটাউনে সম্প্রতি সাপের উৎপাতে আতঙ্কে বাসিন্দারা। একাধিক আবাসনে বিষধর সাপ দেখা যাওয়ায় উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকেই। সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যুও হয়েছে। দু'একজনকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছে। যেকারণে বনদফতর সেখানে সাপ ধরার কাজ চালাচ্ছে। কয়েকদিন আগে সাপের কামড় থেকে বাঁচতে ও সাপে কামড়ালে কী করতে হবে, তা শেখাতে একটি কর্মশালা করেছিল বন দফতর। সেইসঙ্গে চলছে সাপ ধরা।
বন দফতর সূত্রে খবর, নিউটাউনের আবাসন, অফিস, পার্ক এবং সল্টলেকের কিছু অংশ থেকে ধরা সাপগুলিকে ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়ার জঙ্গলে ছাড়া হচ্ছে। সল্টলেকের বৈশাখীতে বন বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ অ্যান্ড ট্রানজিট ফ্যাসিলিটি টাউনশিপের তিনটি অ্যাকশন এলাকা এবং সল্টলেকের কিছু অংশ থেকে সাপ ধরার জন্য প্রতি মাসে ৪০টিরও বেশি কল পাচ্ছে বন দফতর। সূত্রের খবর, এক মাসে বন বিভাগের কর্মীরা গড়ে প্রায় ৩০টি বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ধরেছেন বন দফতরের কর্মীরা।
নিয়ম অনুযায়ী, একটি সাপ ধরার পর বনকর্মীরা সেটার পরীক্ষা করেন। দেখা হয়, ওই সাপে বিষ রয়েছে কী না। ক'য়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তারপর ছাড়া হয় জঙ্গলে। মোট ২০টি সাপ ধরা পরার পর সেগুলিকে ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ার জঙ্গলে ছাড়া হচ্ছে। যদিও যেকোনও সরীসৃপকে উদ্ধার করার পর তার নিজের আবসস্থলের কাছেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু নিউটাউন ও সল্টলেক শহুরে এলাকা, তাই এক্ষেত্রে সাপেদের পুনর্বাসন হচ্ছে বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রামের বনভূমি সাপের পক্ষে উপযোগী। আর নিউটাউন এলাকায় ওই সাপ ছাড়া হলে, সেগুলি ফের বাড়ি-অফিসে ঢুকে যেতে পারে।
এনকেডিএ (নিউটাউন ডেভলপমেন্ট অথরিটি) নিউটাউনে সাপের উৎপাত কমাতে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। কার্বলিক অ্যাসিড, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। ঝোপঝাঁড়-আগাছা পরিস্কার করা হচ্ছে। বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। সাপের কামড়ে ২ যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে নিউটাউনে। ক্লাস টেনের এক ছাত্রী-সহ দুজন সাপের ছোবল খেয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিল। এনকেডিএ কাছাকাছি হাসপাতাল না থাকায় চিত্তররঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা করার জন্যও আবেদন জানিয়েছে।