ঘূর্ণিঝড় 'দানা'য় ক্ষয়ক্ষতি মনিটর করতে নবান্নে রাতভর কেটেছে । দানা-র জেরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিও চলছে। দানা-র জেরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে ত্রাণ ও পর্যাপ্ত সাহায্যে কোনও রকম ত্রুটি না হয়, তার জন্য সব জেলার জেলাশাসক ও পুলিশকে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নির্দেশ দেওয়া ও জেলাগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার বৈঠকেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক করলেন মমতা। যে সময়ে কলকাতায় সম্ভাব্য সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পরিকল্পনা নিয়ে মমতা উদ্বেগ প্রকাশ করলেন, সেই সময়টি ভীষণ তাত্পর্যপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে মমতার মুখে শোনা গেল, 'আমি এদের রাজনৈতিক নেতা বলি না।'
'ওর মধ্যে কেউ দুষ্টুমি করতে না পারে'
আজ অর্থাত্ শুক্রবার মমতা কালীপুজো ও ছটপুজোয় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই সাম্প্রদায়িক হিংসার বিষয় তোলেন। সেই প্রসঙ্গে নির্দিষ্ট ভাবে কলকাতার নাম নেন। একই সঙ্গে 'রাজনৈতিক নেতা' শব্দবন্ধটিও শোনা তাঁর গলায়। কালীপুজোয় বাজি তৈরির আড়ালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা রুখতে মমতা বলেন, 'ফায়ার ক্র্যাকারে নজর রাখবে। যাতে ওর মধ্যে কেউ দুষ্টুমি করতে না পারে। এগুলো পুলিশকে ইন্টেলিজেন্স আরও শক্তিশালী করতে হবে, এসটিএফ-এর সাহায্য নিতে হবে। কোনও রকম বিস্ফোরণের সুযোগ যাতে কেউ না সৃষ্টি করতে পারে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে পারে, একটা প্ল্যানিং চলছে। এটাকে ভেস্তে দিতে হবে।'
'কলকাতায় একটা কমিউনাল টেনশনের প্ল্যানিং চলছে'
এরপরেই তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে কলকাতার প্রসঙ্গ তুলে মমতা বললেন, 'কলকাতায় একটা কমিউনাল টেনশনের প্ল্যানিং চলছে। কোনও কোনও দুষ্টু লোক আছে, আমি এদের রাজনৈতিক নেতা বলতে চাই না। এদের মাথাটাই হচ্ছে মরুভূমি। শুধু দুষ্টুমির প্ল্যান করে। সেই প্ল্যানটাকে ভেস্তে দিতে হবে। আইবি, এসটিএফ এবং পুলিশের যে সোর্স, তাকে খুব স্ট্রংলি কাজে লাগাতে হবে। কাল তো ঝড় বৃষ্টির সময় হাওড়ায় একজনকে মার্ডার করে দিয়ে চলে গেল। লোকটা তো মরে গেল। লোকটা খারাপ হোক বা ভাল, আমাদের দেখতে হবে লোকটি কেন মরল। এই সব সময়ের সুযোগ কাজে লাগায় ওরা। উত্সব, দুর্যোগের সুযোগ নেয়।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য তাত্পর্যপূর্ণ
এখন প্রশ্ন উঠছে, কলকাতায় সাম্প্রদায়িক হিংসার আশঙ্কা প্রকাশ করে কেন রাজনৈতিক নেতা শব্দবন্ধটি ব্যবহার করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু কোনও কথাই আলটপকা বলে দেন না। আপাতত ভাবে কোনও কোনও মন্তব্য হালকা মনে হলেও, তার পিছনে নির্দিষ্ট কারণ থাকেই।