মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে এবার প্রেসমিট করল পুলিশ। তাদের তরফে সাফ জানানো হল, এই অভিযানকে পুলিশ কখনও সমর্থন করে না। অভিযান বেআইনি। যে বা যারা অভিযানের ডাক দিয়েছে তারা দুষ্কৃতী। পুলিশের তরফে সাফ জানানো হয়, সাধারণ মানুষ যাতে এই অভিযান থেকে দূরে থাকেন।
এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান নিয়ে বলেন, শুরু থেকে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজের নামে প্রেসমিট করা হয়েছে। তবে এমন কোনও সংগঠন নেই। এর আগে এমন কোনও সংগঠনের অস্তিত্ব বোঝা যায়নি। শুরু থেকে বলা হচ্ছে, এই আন্দোলন অরাজনৈতিক। অথচ এদের নামে যে ফেসবুক পেজটা আছে সেখান থেকে পরিষ্কার কে বা কারা নেপথ্যে রয়েছে।
সুপ্রতীম সরকার আরও বলেন, শুরু থেকে এটা ছাত্র আন্দোলন বলে চালানো হচ্ছে। অথচ সেদিন ইউজিসি নেটের পরীক্ষা আছে। সেই দিনে এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, যাঁরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে একজন শহরের পাঁচতারা হোটেলে রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন। সেই সাক্ষাৎ নিয়ে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ওই পুলিশ অফিসারের আরও অভিযোগ, তাঁদের কাছে খবর আছে মিছিল বা আন্দোলনের সামনের সারিতে রাখা হবে মেয়েদের। বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করা হবে। তবে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। কে বা কারা উস্কানি দিচ্ছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সুপ্রতীম সরকার জানান, পুলিশের তরফে ছাত্র সমাজ ও সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানতে চেয়েছিল, কোথা থেকে মিছিল আসবে, কত লোক হবে ইত্যাদির তথ্যগুলো দিতে। তবে তা দেওয়া হয়নি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, পুলিশকে তথ্য দিতে হবে। অথচ যারা নবান্ন অভিযান করবে তাদের তরফে কোনও নির্দেশ মানা হয়নি।
ওই আধিকারিকের দাবি, কলকাতা বা হাওড়া সংলগ্ন এলাকায় মিছিল, আন্দোলন করার জন্য বলা হয়েছিল। তবে তাতে কর্ণপাত করেনি আন্দোলন আহ্বানকারীরা। তারপরই সুপ্রতীম সরকারের সংযোজন, নবান্ন রাজ্যের সচিবালয়। এটা রেস্ট্রিক্টেড এলাকা। নবান্ন বা তার সংলগ্ন এলাকা এভাবে জমায়েত করা যায় না। তারপর তিনি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাও দেখেন। দাবি করেন, সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়েছে আইন শৃঙ্খলা কেউ হাতে নিতে পারবে না।
সুপ্রতীম সরকারের আগে একই কথা শোনা যায় এডিজি আইনশৃঙ্খলা মনোজ বর্মাও একই কথা বলেন। তিনি জানান, নেট পরীক্ষা রয়েছে। তবে পরীক্ষার্থীদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। পুলিশ রাস্তায় থাকবে। সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধে হবে না। তবে আম জনতা যাতে এই মিছিলে বা অভিযানে অংশ না নেন, সেই বার্তাও দেন মনোজ বর্মা।
নবান্ন অভিযানের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই দলের নেতা কুণাল ঘোষ ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দুটি ভিডিও দেখিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি করেন। বিজেপি, আরএসএস, এবিভিপি এগুলোকে প্রমোট করছে বলে দাবি করে তাঁদের অভিযোগ, বাইরের রাজ্য থেকে গ্রুপ করে লোক ঢোকানো হতে পারে এখানে। গন্ডগোলের পরিকল্পনা রয়েছে। নবান্ন অভিযান বেআইনি। যারা বাংলায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, তারাই লোককে উস্কিয়ে গোলমাল করার চেষ্টা করছে। কিছু সিপিএম-এর লোক এর পিছনে রয়েছে। নবান্ন অভিযানের কোনও অনুমতি পুলিশের থেকে নেওয়া হয়নি।