আরজি কর কাণ্ডে সোশ্যাল মিডিয়ায় 'আপত্তিকর' পোস্টের অভিযোগে গ্রেফতার কলেজ ছাত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিয়ে 'আপত্তিকর' পোস্ট করেন কীর্তি শর্মা নামের এক তরুণী। আরজি কর কাণ্ডে তিনি নির্যাতিতার নাম-পরিচয়ও প্রকাশ্যে আনেন বলেও অভিযোগ। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তালতলা থানার তরফে ওই তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়।
সূত্রের খবর, ইনস্টাগ্রামের একটা অ্যাকাউন্ট থেকে আরজি কর ইস্যুতে পোস্ট করা হয় বলে অভিযোগ। পোস্টে নির্যাতিতার নাম ও পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হয়। একইসঙ্গে আরজি কর কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সম্পর্কেও 'আপত্তিকর' পোস্ট করার অভিযোগ ওঠে সেই তরুণীর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে তালতলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
নির্যাতিতার পরিচয় ও ছবি প্রকাশ্যে আনা যাবে না, এই বার্তা আগেই দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনা অপরাধ। আরজি কর কাণ্ড এখন স্পর্শকাতর ইস্যু, কোনওরকম বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করলে তা থেকে সমাজে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই ভুলবার্তা যাতে না ছড়ায়, তা নিয়ে সচেতন করেছে কলকাতা পুলিশ। তারমধ্যেই সামনে এসেছে ওই তরুণীর পোস্ট।
এদিকে এই ঘটনায় ৭২/৭৯/২৪০/৩৫১(২)/৩৫২/৩৫২(১)/৩৫৬(২)/১৯৬(১) BNS ধারায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তালতলা থানার পুলিশ ছাত্রীকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। রবিবার বিকেলে তাঁকে গ্রেফতারির পর আজ সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হবে। অভিযুক্তের আইনজীবী বলেন, 'FIR টি ১৭ অগাস্ট করা হয়। ১৮ তারিখ গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তকে। পুলিশ কোনরকম তদন্ত না করেই তাড়াহুড়ো করে কলেজ ছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে। এমনকী তাঁকে হাজির হওয়ার জন্য আগে থেকে কোনও নোটিশও দেওয়া হয়নি। কলকাতার পুলিশ সরাসরি তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। আমরা জানতে চাই, এটা কি শুধু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খুশি করার জন্য?'
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে ক্রমশ বাড়ছে আন্দেলনের ঝাঁঝ। রবিবার সল্টলেকে প্রতিবাদ একযোগে প্রতিবাদ করেছেন ইস্টলবেঙ্গল-মোহনবাগান সমর্থকরা। রাতেও যাদবপুর-সহ একাধিক জায়গায় জমায়েত হয়েছে। এদিকে আরজি কর কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নির্যাতিতার বাবা। তিনি দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী দ্বিচারিতা করছেন। একদিকে তিনি নিজেই আন্দোলনে নামছেন। মিছিল করছেন। অন্যদিকে আবার আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে নির্যাতিতার মা বলেন, 'আমরা রাজ্যের জনগণকে একটি বার্তা দিতে চাই। যে বা যাঁরা কন্যাশ্রী প্রকল্প, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা নিচ্ছেন, তাঁদের এই প্রকল্পের সুবিধে নেওয়ার আগে নিজেদের সুরক্ষার বিষয়ে দু'বার ভাবা উচিত।' তিনি আরও বলেন,'যাঁরা দোষী তাঁদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। তারপর আমি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করব। কিন্তু ন্যায়বিচার হওয়ার আগে নয়।'