ক্রমশ কমছে রবীন্দ্র সরোবরের জলস্তর। ১৯৩ একরের এই সরবরের জলস্তর কমে যাওয়ায় পরিবেশগত ভারসাম্য ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। সরোবরের সীমানা প্রাচীরের চিহ্নগুলি ইঙ্গিত করছে যে, জলের স্তর ক্রমশ নামছে। পার বরাবর জলের গভীরতা এখন মাত্র ৫ থেকে ফুট। রোয়াররা জানাচ্ছেন, সরোবরের মাঝখান থেকেই এখন শুধু নৌকো চালানো যাচ্ছে। পাড়ের দিকে যাওয়াই যাচ্ছে না।
কেএমডিএ-র (কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) একজন আধিকারিক জলস্তর কমে যাওয়ার জন্য বৃষ্টির ঘাটতিকে দায়ী করেছেন। জুলাই এবং আগস্ট, কলকাতায় সবচেয়ে বৃষ্টির মাস। কিন্তু গতবছরও বৃষ্টির ঘাটতি ছিল। এবছরও ১ এপ্রিল থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত কলকাতায় বৃষ্টির ঘাটতি ৬০ শতাংশেরও বেশি বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। রোয়ার এবং লেকে রোজ হাঁটতে আসা লোকজন দাবি করছেন, সরোবরকে বাঁচাতে কেএমডিএ-র জরুরী হস্তক্ষেপ করা উচিত।
অনেকের মতে, বৃষ্টির অভাব প্রাথমিক কারণ। কিন্তু আবহাওয়াকে দায়ী করে দায় এড়াতে পারে না কেএমডিএ। অনেকের দাবি, অনেক আগে আদিগঙ্গার সঙ্গে একটি পাইপলাইন রবীন্দ্র সরোবরে যুক্ত ছিল। পাইপলাইনটি ছিল টালিগঞ্জ রেল ব্রিজের নীচ দিয়ে। কিন্তু মেট্রোর কাজের জন্য ওই পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাই এখন শুধু বৃষ্টির ওপরেই নির্ভর কলকাতার বড় এই জলাভূমি।
হ্রদ থেকে অতিরিক্ত জল বের হওয়ার জন্য কয়েকটি ভালভ রয়েছে৷ কিন্তু জলের স্তর কম থাকায় ওই ভালবগুলি কোনও কাজেই লাগছে না। জল কম থাকায় রোয়িং করাও সমস্যায় পড়ছে। একজন রোয়ার জানিয়েছেন, পাড়ের দিকে বোটগুলো নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। নিয়ে গেলে আটকে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার ওয়েস্ট বেঙ্গল রোয়িং অ্যাসোসিয়েশন, কলকাতা রোয়িং ক্লাব, বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব এবং লেক ক্লাব একটি বৈঠক করে সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করেছে। তাঁদের তরফে কেএমডিএ কে একটি চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সরোবরের গভীরতা এখন মাঝখানে ২৩ ফুট। ক'য়েকদফা ভারী বৃষ্টি না হলে ওই সমস্যা মিটবে না বলেই জানাচ্ছেন অনেকে। অতিরিক্ত জল নিষ্কাশনকারী ভালভের স্তর বাড়ানো এবং ব্যাঙ্কগুলির ম্যানুয়াল ড্রেজিং করা হবে বলে কেএমডিএ সূত্রে জানা গেছে।