তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে জায়গা পাওয়া অনেক নেতা-নেত্রীর কাছে স্বপ্নের মতো। বক্তব্য রাখার সুযোগ পেলে তো কথায় নেই। অনেক বাঘা বাঘা নেতা-মন্ত্রী একুশের মঞ্চে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান না। কারা বক্তব্য রাখবেন, তা ঠিক করে দেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার বক্তার তালিকায় জায়গা করে নেন রাজন্যা হালদার। বক্তব্য রাখার পরই লাইমলাইটে তিনি। অনেকের প্রশ্ন কে এই রাজন্যা ? কীভাবে একুশের মঞ্চে সুযোগ পেলেন বক্তব্য রাখার ?
আসলে প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী এই রাজন্যা হালদার। বাড়ি সোনারপুর। প্রেসিডেন্সি থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি পিএইচডি করছেন। ২০১৭ সাল থেকে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেছেন রাজন্যা। এখন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ছাত্র যুব সংগঠনের সহ সভাপতি। রাজন্যার বড় হওয়া রাজনৈতিক পরিবেশেই। তাঁর বাবা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ দেন। রাজন্যার দাদুও কংগ্রেস করতেন। ছাত্র নির্বাচনে প্রেসিডেন্সিতে দু'বার তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন ৷ কিন্তু সময় বদলানোর পাশাপাশি রাজনৈতিক মতও পরিবর্তন হয় তরুণীর। তারপর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর হাত ধরেই তৈরি হয় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন। সেই থেকেই রাজন্যা তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদে বেশ পরিচিত হয়ে ওঠেন।
রাজন্যাক আরও একটা পরিচয় রয়েছে। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তৈরি ‘জয়ী’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্যা। নিজে গানও করেন। এই তো কয়েক মাস আগে শহিদ মিনারের পাদদেশে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে ২ দিনের ধরনা চলাকালীন তৃণমূল ছাত্র-যুবদের গান শুনে এই ব্যান্ডটি তৈরি করেন তৃণমূল নেত্রী। সেই দলকে যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্যও করেন তৃণমূল নেত্রী। রাজন্যা সেই দলেরই সদস্য। ২০ জুলাই যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২১-এর মঞ্চ দেখতে যান সেখানেও রাজন্যাকে দেখা যায় গান করতে।
সেদিন বেশ ঝাঁঝালো বক্তব্যও দেন রাজন্যা। মঞ্চ থেকে বলেন, 'আমি আশা করি, আগামী বছর ২১ জুলাই আর ধর্মতলায় নয়, এই দিনটি পালিত হবে লালকেল্লায়। বাংলার বীর কন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের দিল্লি চলোর ডাক দিয়েছেন। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকব। ২০১৯-এর আগে আমলা আয়লা দেখেছি, একাধিক ঝড় দেখেছি, করোনা দেখেছি। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে মানুষের পাশে ছিলেন। দেখান তো আর একজন কোনও নেত্রীকে, যিনি বাংলার মানুষের কথা ভেবে এত কাজ করেছেন। মমতা ও অভিষেক সেই মানুষ যারা মানুষের মুখে রেশন তুলে দিয়েছেন।'
কেন্দ্র সরকারকেও আক্রমণ করেন রাজন্যা। বলেন, 'ইডি, সিবিআই দিয়ে তৃণমূল নেতাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে তৃণমূল কর্মীরা দমে যাবেন না। কারণ, আমাদের সঙ্গে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।'