আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হলের সামনে একটি ঘর ভেঙে ফেলার ঘটনায় তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে ৯ই অগাস্ট, যখন সেমিনার হলের ভিতর থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার চার দিনের মধ্যেই সেখানে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ করা হয় যে, অপরাধের স্থান থেকে প্রমাণ মুছে ফেলার জন্য এই কাজটি করা হচ্ছে।
সেমিনার হলের সামনে ঘর ভাঙা নিয়ে হাসপাতালে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। জুনিয়র চিকিৎসকরা দাবি করেন, প্রমাণ মুছে ফেলার জন্য এ ধরনের নির্মাণ কাজ চালানো হচ্ছে। এই ঘটনায় হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনা চরমে ওঠে। অভিযোগটি আরও গুরুতর রূপ ধারণ করে যখন নির্মাণকাজের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
তবে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় আরেকটি নথি ভাইরাল হয়েছে, যা এই অভিযোগগুলিকে চ্যালেঞ্জ করে। ওই নথিতে বলা হয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে নতুন বিশ্রাম কক্ষ এবং চেঞ্জিং রুমের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। বিশেষ করে মহিলাদের রাতের শিফটে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় তাঁদের সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে হচ্ছিল।
১০ ও ১২ আগস্টের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, জুনিয়র ডাক্তার, নার্সিং স্টাফ এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর যৌথ পরিদর্শনের পর সেমিনার হলের সামনের কক্ষের সংস্কার এবং কিছু নতুন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৩ আগস্ট থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নথি অনুসারে, নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল চিকিৎসকদের জন্য আরও ভালো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, এবং এতে ৮ জন, যার মধ্যে তিনজন জুনিয়র চিকিৎসক এবং তিনজন নার্সিং স্টাফ ছিলেন, তাঁরা স্বাক্ষর করেন।
এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেমিনার হলের ভেতরে কোনও সংস্কার কাজ হয়নি এবং অপরাধের স্থান অক্ষত রয়েছে। প্রাচীর ভাঙার ঘটনাটি সেমিনার হলের সামনে ঘটেছে, হলের ভিতরে নয়। তবুও এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে কিছু মহলে প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমানে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে এবং তদন্ত চলছে। কিন্তু এই ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।