মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে মেল পাঠালেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। বুধবার সকালে আন্দোলনকারীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ইমেল পাঠাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এই ইমেল আলোচনা শুরু করার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর। ডাক্তাররা জানান, সমস্যার সমাধানের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে চান।
সুপ্রিম কোর্টের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা তাঁদের বিক্ষোভ থেকে সরে আসেননি। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের কাজে ফেরার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু চিকিৎসকরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন। মঙ্গলবার চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দলকেও দেখা করতে ডাকা হয়েছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের তরফে। কিন্তু মমতা সরকারের এই প্রস্তাব নাকচ করে দেন আন্দোলনরত ডাক্তাররা। তবে এবার তাঁরা আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য মেল পাঠালেন।
গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অভিযান করেন আন্দোলনকারীরা। রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে পদত্যাগ করতে হবে। এই দাবি তোলা হয় অবস্থান থেকে। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও সামিল হন আন্দোলনে। এদিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য রাজি হন স্বাস্থ্য সচিব। রাস্তায় যখন আন্দোলন চলছে তখন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের জানান, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম সন্ধে ৬ টা ১০ মিনিটে আন্দোলনকারীদের একটা মেল পাঠান। সেই মেলে তাঁদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হয়। তবে তাদের তরফে কোনও উত্তর আসেনি। তাঁর আরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আলোচনার জন্য সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন মিমাংসা করতে। সেজন্য সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। তবে মেলের কোনও উত্তর না আসায় তিনি বেরিয়ে যান নবান্ন থেকে।
এদিকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যখন প্রেসমিট করেন তখন পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করা হয় জুনিয়ার ডাক্তারদের তরফে। তাঁরা জানান, যেভাবে মেল করা হয়েছে তা অপমানজনক ও অসম্মানজনক। এক আন্দোলনকারী বলেন, 'আমরা কয়েকটা কথা স্পষ্ট করতে চাই। আমরা কাল থেকে বলছি সরকার সদর্থক বার্তা দিক। এটা কোনও সদর্থক বার্তা নয়। আমরা এর আগে লালবাজারে যখন গিয়েছিলাম, তখন সিপি বলেছিলেন তিনি পদত্যাগ করতে চান। মুখ্যমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, তিনি পদত্যাগ করাতে চাননি। কিন্তু আজ যে মেল এল তা আমাদের কাছে অপমানজনক। মেলটি নবান্ন থেকে পাঠানো হয়নি। মেলে লেখা হয়েছে, ১০ জনের বেশি আসতে পারবে না। এটা আমরা অসম্মানজনক বলে মনে করছি। যেভাবে মেলটি এসেছে সেই মেলের সাড়া দেওয়ার জায়গাতে আমরা নেই। যদি ভবিষ্যতে মেল আসে তাহলে ভেবে দেখব।'
প্রসঙ্গত, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় CJI সাফ জানিয়ে দেন, চিকিৎসকদের মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার মধ্যে কাজে ফিরতে হবে। তা না করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তবে একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এও জানিয়ে দেয়, ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকেই। তবে মঙ্গলবার বিকেল পেরিয়ে গেলেও কাজে ফেরেননি ডাক্তাররা।