আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের রহস্যময় মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। জুনিয়র চিকিৎসক এবং নার্সিং পড়ুয়ারা বিক্ষোভে নেমেছেন, তাঁদের দাবিতে বলিষ্ঠভাবে উঠে এসেছে অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তি। এই ঘটনা চিকিৎসা পরিষেবায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে, হাসপাতালের কাজ প্রায় থমকে গিয়েছে। তবে এমারজেন্সি চালু রয়েছে।
চেস্ট মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন যে তাঁরা ধৃতকে আগে চিনতেন না। তিনি বলেন, "ধৃতকে আমরা চিনি না, সেমিনার হলে সে কী করছিল, তা এখনও রহস্য। তবে আমরা মনে করি, এটা একজনের কাজ নয়, আরও কেউ এতে জড়িত থাকতে পারে।" তাঁর মন্তব্যের পর হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক এবং কর্মীদের মধ্যেও সন্দেহের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই জানিয়েছেন, ধৃতকে তাঁরা কোনওদিন দেখেন নি।
শনিবার সকাল থেকে জুনিয়র চিকিৎসকরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। নার্সিং পড়ুয়ারা হাসপাতালের চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন, তাঁদের দাবি— অবিলম্বে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হোক। তাঁরা হাসপাতাল সুপারের পদত্যাগের দাবিও করেছেন।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে তরুণী চিকিৎসকের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তিনি আরও জানান, পুলিশের সন্দেহের কেন্দ্রে রয়েছে ধৃত সঞ্জয় রায় নামে এক যুবক। যাকে প্রাথমিকভাবে মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কমিশনারের বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছে পুলিশ, তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি বেশি তথ্য প্রকাশ্যে আনতে নারাজ।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একাধিক দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, মূল অপরাধীরা এখনও ধরা পড়েনি এবং পুরো বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, যাতে নতুন করে কোনও অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটে। এই ঘটনার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক এবং নিরাপত্তার অভাব সৃষ্টি হয়েছে, যা থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আরও সময় লাগবে।