'ছেলের একটাই বিয়ে করেছিল। স্ত্রী ক্যানসারে মারা যাওয়ার পর অতিরিক্ত মদ খেতে শুরু করেছিল। ষড়যন্ত্র করা হয়েছে'। আউড়ে চলেন সঞ্জয় রায়ের ষাটোর্ধ্ব মা। তবে মা জানেন না ছেলে কী কাজ করে? ছেলের চারটে বিয়ে করেছে বলে শোনেননি। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তার ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। সে ৪টে বিয়ে করেছে বলে খবর। তথাকথিত চতুর্থ স্ত্রীয়ের শাশুড়ির দাবি, সঞ্জয় যে সিভিক ভলান্টিয়ার সেটা ওর মা জানতেন। সব জেনেও এখন মিথ্যা বলছেন।
ভবানীপুরে বাঙ্গুর নিউরোসায়েন্সের ঠিক উল্টোদিকের তস্য গলি। তার সেই রাস্তা গিয়ে হাঁটতে সঞ্জয় রায়ের বাড়ি গিয়েছিল বাংলা ডট আজতক ডট ইন। এখানেই এক চিলতে ঘরে থাকে সঞ্জয় আর তার মা মালতি রায়। ছোট ঘর। বাইরে এক ফালি রান্নাঘর। তার কোণে ফ্রিজ। 'কেউ বাড়ি আছেন?' এই প্রতিবেদকের ডাক শুনে বেরিয়ে আসেন সঞ্জয়ের মা। বয়স ষাটের বেশি। একাই থাকেন এই ঘরে। ছেলের খবর শুনেছেন? বৃদ্ধা ঘাড় নাড়লেন। ভিতরে বসতে বললেন। শুরু হল কথা। কেমন আছেন? উত্তর এল,'ওই চলছে কোনওরকমে'।
আপনার ছেলে মদ খেয়ে এক তরুণী ডাক্তারকে নৃশংসভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ। বৃদ্ধা বললেন,'এর পিছনে একা সঞ্জয় নেই। আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। আর ও মদ খেতে শুরু করেছিল স্ত্রী মারা যাবার পর। ক্যানসার হয়েছিল আমার বউয়ের। ওর চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ করেছিল'। তবে সঞ্জয় কয়েক মাস ধরেই এই বাড়িতে থাকে না। মা বললেন,'ছেলে কয়েক মাস আগেই কাজ আছে বলে চলে গিয়েছিল। বাজারদোকান করে দিয়ে যেত'।
ছেলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরও সঞ্জয়ের পাশেই মা। বললেন,'এমন ছেলে সবার ঘরে হোক'। কীভাবে এমনটা বলতে পারেন, আপনিও তো মহিলা? মালতি বললেন,'ছেলে ঘরের সব দায়িত্ব নিত। বউয়ের চিকিৎসা করিয়েছিল। যখন যা দরকার সব করেছে'।
কিন্তু সঞ্জয়ের শাশুড়ির শোনালেন অন্য কথা। তিনি বলেন,'এর আগে একটাই বিয়ে করেছিল সঞ্জয়। তার পর আমার মেয়ের সঙ্গে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়'। মেয়ের উপর কি অত্যাচার করত? ট্যাংরার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা বলেন,'একবার মেয়েকে মারধর করেছিল সঞ্জয়। কালীঘাট থানায় এফআইআর করি। তারপর থেকে আর অত্যাচার করেনি'।
আপনার মেয়ের চিকিৎসার খরচও কি সঞ্জয় দিয়েছিল? বৃদ্ধা বলেন,'না, কোনও খরচ দেয়নি। আমিই মেয়ের খরচ দিয়েছিলাম'। আর মদ? বৃদ্ধার বক্তব্য, মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে মদ খাচ্ছে এমনটা নয়। ও আগে থেকেই মদ খেত। আমার মেয়ে বলেছিল।