মেয়েদের ‘রাত দখলের’ কর্মসূচিতে বুধবার কর্তব্যরত অবস্থায় জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। শুক্রবার এই অভিযোগ করে ওই মহিলা কনস্টেবলের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে রাজ্য পুলিশের প্রশ্ন, ‘রাতটা কি শম্পারও ছিল না?’ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু গোটা ঘটনায় আরও একবার পুলিশের ব্যর্থতার প্রশ্নই তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুর অভিযোগ, 'ঘটনার রাতে মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য কোনও পুলিশ ছিল না। কারণ অদক্ষ পুলিশ বাহিনী তৃণমূলের গুন্ডাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল এবং পূর্ব পরিকল্পিত ভাঙচুরের সহ-ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে কাজ করেছিল। আমি তৃণমূল গুন্ডাদের হাতে ট্রেইনি সি নম্বর ৭০২-এর ওপর হামলার নিন্দা জানাই।'
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শুভেন্দুর প্রশ্ন:-
'আহত মহিলার প্রশিক্ষণ কি সম্পূর্ণ হয়েছে? কারণ আমার সূত্র বলছে যে, তিনি এখনও একজন প্রশিক্ষণার্থী এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য তাঁকে মোতায়েন করা যাবে না। যদি তিনি একজন প্রশিক্ষণার্থী হন তাহলে ১৪ অগাস্ট সন্ধ্যায় তাঁকে ডিউটি দিল কে? এমন জঘন্য কাজের জন্য দায়ী টিএমসির গুন্ডাদের কি চিহ্নিত করা হয়েছে?'
এদিকে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে নিয়ে তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৯ আগস্ট রাত ১১টার দিকে আরজি করের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় সঞ্জয় রায়কে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি আবার বেরিয়ে যান এবং বাইরে কোথাও মদ্যপান করেন। পরে, ভোর ৪টার দিকে, আবার তাকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় হাসপাতালের চার তলার সেমিনার হলের কাছাকাছি। সেখানে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট তিনি ছিলেন। এর পর তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। পরের দিন সকালে, সেমিনার হল থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তে প্রমাণিত হয় যে তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।
এই ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হওয়া একটি ছেঁড়া হেডফোনের সূত্র ধরেই তাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সঞ্জয় তার অপরাধ স্বীকার করেন।
এই নৃশংস ঘটনার পর, কলকাতার আরজি কর-সহ অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে নামেন। দোষীদের কঠোর শাস্তি এবং হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে তারা কর্মবিরতি শুরু করেন, যার ফলে হাসপাতালের বহির্বিভাগের পরিষেবা ব্যাহত হয়।