মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েক জন সাধুর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্যের প্রতিবাদে এবার কলকাতায় হবে খালি পায়ে মিছিল। ষষ্ঠ দফার ভোটের ঠিক আগের দিন শুক্রবার কলকাতায় সাধু, সন্তরা মিছিল করবেন খালি পায়ে। উত্তর কলকাতার গিরিশ অ্যাভিনিউ থেকে বিবেকানন্দের জন্মভিটে পর্যন্ত এই মিছিল হবে। এই যাত্রার নাম দেওয়া হয়েছে, 'সন্ত স্বাভিমান যাত্রা'।
সূত্রের খবর, বাংলায় কাজ করছে এমন বেশির ভাগ ধর্মীয় সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সেই বৈঠকে হাজির ছিল ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, রামকৃষ্ণ মিশন-সহ অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠনের সাধু, সন্তরা। সোমবার রাতেই সেই জরুরি বৈঠকে জলপাইগুড়িতে মিশনের উপর হামলার নিন্দা জানানো হয়। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শুক্রবার সন্ত স্বাভিমান যাত্ করা হবে। বিকেল ৩টেয় বাগবাজারের নিবেদিতা পার্কে সমাবেশ হবে। মায়ের বাড়ি থেকে গিরিশ অ্যাভিনিউ, বাগবাজার স্ট্রিট, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় হয়ে বিধান সরণী দিয়ে বিবেকানন্দ রোডে স্বামীজির জন্মভিটেয় শেষ হবে এই মিছিল। খালি পায়ে হাঁটবেন মিছিলে অংশগ্রহণকারী সাধু, সন্ন্যাসীরা। সাধারণ মানুষকেও এই মিছিলে অংশ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে ভিএইচপি।
ভিএইচপি-র মুখপাত্র সৌরিশ মুখোপাধ্যায় বলেন, 'ভোট ব্যাঙ্কের জন্য বাংলার সাধু সন্তদের অপমান করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রতিবাদে এই পদযাত্রা করবে বাংলার সাধু সন্ত সমাজ। সামিল হবেন ভক্তরাও।'
গত শনিবার থেকে বাংলার রাজনীতিতে আচমকা চলে আসে রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম। আরামবাগের জনসভা থেকে তিনি রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েক জন সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ করেন। তাঁর মূল নিশানায় ছিলেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ। তাঁর নাম করেই মমতা সেদিন বলেছিলেন, 'ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যে লোকটা তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না বলে, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। কারণ, সে ডাইরেক্ট পলিটিক্স করছে।'
মমতার এই মন্তব্যের পরেই তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন কার্তিক। তিনি ক্ষমতা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সোমবার ফের কার্তিককে চড়া সুরে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ওন্দার সভায় নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন মমতা। ফের কার্তিককে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'ধর্মের নামে বিজেপি করে বেড়ান। বিজেপির চিহ্ন বুকে লাগিয়ে করুন। প্রমাণ ছাড়া কিছু বলি না।'
নির্বাচনী আবহে এই ইস্যু হাতছাড়া করেননি প্রধানমন্ত্রী মোদী। মমতার এই মন্তব্যের পাল্টা রবিবার বিষ্ণুপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'তৃণমূল সাধুসন্তদের গালিগালাজ করছে। ভোটব্যাঙ্কের জন্য সাধুদের অপমান করা হচ্ছে।'