সন্দেশখালি নিয়ে বড় খবর। সেখানে লুকোনো অস্ত্রভাণ্ডার থাকতে পারে। সেই আশঙ্কায় নেমে পড়ল এনএসজি (NSG)। শুক্রবার সকালেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে সন্দেশখালির আগারহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মল্লিকপাড়ায় অভিযান শুরু করে সিবিআই। এলাকার এক তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বিশাল অস্ত্র ভাণ্ডারের খোঁজ মেলে বলে খবর। একাধিক সংবাদমাধ্যম সেই খবর প্রকাশ করে। দুপুরের পর সেই এলাকায় নামলেন এনএসজির কম্যান্ডোরা।
যে বাড়িতে অস্ত্রভাণ্ডারের হদিশ মিলেছে সেই বাড়িটি ঘিরে ফেলেছে এনএসজি। সেই বাড়ির আশপাশে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে এনএসজি-র তরফে। বোমা, গোলা-বারুদ থাকতে পারে এই আশঙ্কায় সেখানে নামানো হয়েছে রোবট। এই রোবট পরিচালনা করছেন এনএসডি কমান্ডোরাই।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, মল্লিকপাড়ায় প্রচুর অস্ত্র মজুত রয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে তল্লাশি অভিযানে নামে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সেখানে প্রচুর অস্ত্র ইতিমধ্যেই উদ্ধার হয়েছে। সেই বাড়ির মাটির তলায় বিদেশি বন্দুকও ছিল। সেগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই এলাকাটি মাছের ভেড়ি বেষ্টিত। যে সরু পথ দিয়ে ওই বাড়িতে যাওয়া যায় সেই রাস্তা ঘিরে রেখেছে এনএসজি। সাধারণ মানুষকে সতর্কও করা হয়েছ। নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে সাধারণ মানুষকে। সিবিআই আধিকারিক ও এনএসডি কমান্ডোরা মনে করছেন, ওই এলাকাতে আরও অস্ত্র মজুত থাকতে পারে। সেখান থেকে নথিপত্রও উদ্ধার হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সন্ত্রাসবাদী মূলক কাজকর্ম দমনে এনএসজি-কে ব্যবহার করা হয়। সন্ত্রাসবাদী দমনের লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে এই কমান্ডো তৈরি হয়। এদের আর এক নাম ব্ল্যাক ক্যাটও। মুম্বই হামলার সময় ওবেরয়, তাজ হোটেল ও নরিম্যান হাউসে জঙ্গিদের হাত থেকে অসংখ্য পণবন্দিদের উদ্ধার করেছিলেন এনএসজি কম্যান্ডোরা। এনএসজি কমান্ডোরা স্পেশ্যাল অ্যাকশন গ্রুপ এবং স্পেশ্যাল রেঞ্জার গ্রুপ এই দুটি ভাগে বিভক্ত। দেশের অন্যতম সেরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী বলা হয় এদের।
এদিকে সন্দেশখালিতে NSG কম্যান্ডো নামানো নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এই নিয়ে ট্যুইটও করেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'সন্দেশখালি ইস্যু জিইয়ে রাখার জন্য পরিকল্পিত চক্রান্তে অতিনাটকীয় কাজকর্ম করে ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে দিল্লির তরফ থেকে। আগাম সাজানো নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। খবর ছড়িয়ে, যন্ত্র নামিয়ে বাজার গরম করছে। পুলিশের আরও সতর্ক থাকা দরকার।'
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। সন্দেশখালি মামলার তদন্তভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI-এর হাতে তুলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তারই বিরোধিতা করে,সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। আগামী ২৯ এপ্রিল মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।