আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের পরও চোখে-মুখে কোনও ভয় ছিল না অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের। খবর সূত্রের। পুলিশ তাকে খুঁজছে একথা জানার পরও সঞ্জয় তার সিভিক ভলান্টিয়ার সঙ্গী সৌরভকে বলেছিল, 'আমি সামলে নেব।' সূত্রের দাবি এমনটাই। দেখেশুনে অনেকে বলছেন, সঞ্জয়ের মাথার উপর কোনও প্রভাবশালীর হাত ছিল। সেই কারণেই পুলিশ তার খোঁজ করছে জেনেও ভয় পায়নি। বরং ফের মদ খেয়েছে।
সূত্রের দাবি, সঞ্জয় আগেই জানতে পেরেছিল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারে। তবে তা নিয়ে সে চিন্তিত ছিল না। ভয়ও পায়নি। এমনকী ধর্ষণ করে খুনের জেরে সে অনুতপ্তও ছিল না। ৯ তারিখে সেই তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়। ১০ তারিখ সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। সূত্রের দাবি, জেরার প্রথম দিকে সঞ্জয় দাবি করে ধর্ষণ ও খুন করার সময় সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল।
১০ অগাস্ট সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। সেখানে মোট ১৫ জনকে ওই সেমিনার হলে আসা যাওয়া করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে ছিল সঞ্জয় রায়ও। সূত্রের দাবি, ওই সিভিক ভলান্টিয়ার সেমিনার হলে গিয়েছিল তার বন্ধু সৌরভের এক আত্মীয়র ভর্তি থাকার সুবাদে।
সূত্রের খবর, তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের পর কলকাতা আর্মড পুলিশের ৪ নম্বর ব্যাটালিয়ানে ঘুমোতে যায় সঞ্জয়। সেখানে তার থাকার ব্যবস্থা করেছিল কলকাতা পুলিশের এএসআই অনুপ দত্ত। সেদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সঞ্জয় ফের মদ খায় ও ঘুমিয়ে পড়ে।
সেদিন সৌরভ সঞ্জয়কে ফোন করে লাঞ্চ খাওয়ার জন্য। এই সৌরভই আগের রাতে সঞ্জয়ের সঙ্গে গিয়েছিল কলকাতার দুই যৌনপল্লিতে। সঞ্জয়কে ডাকার সময়ই সৌরভ আরজি করের ঘটনা সম্পর্কে জানায়। সে এও জানায়, পুলিশ তার খোঁজ করছে। তবে সঞ্জয় তাতে সেভাবে কর্ণপাত করেনি। বরং সে বলে, 'আমি সামলে নেব।' তারপর সঞ্জয় সেই জায়গা ছেড়ে চলে যায়। সে খাবার মুখে তোলেনি। বরং ফের মদ খায়।
এরপর পুলিশের একটি দল ব্যারাকে যায়। তারা সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার সম. সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল। সেই সময় সঞ্জয়ের মেডিক্যাল পরীক্ষাও করা হয়। সেখানে দেখা যায়, সঞ্জয়ের গায়ে একাধিক কাটা ছেঁড়ার দাগ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ অনুমান করেছিল, নির্যাতিতা তরুণী নিজেকে বাঁচাতে সঞ্জয়কে বাধা দিয়েছিল। সেই কারণেই তার শরীরে একাধিক ছোটো ছোটো ক্ষত ছিল।
সেদিনই পুলিশ ওই সেমিনার হল থেকে একটা হেডফোন সহ বেশ কয়েকটা জিনিস উদ্ধার করে। সেখানে সঞ্জয়ের ফোনের সঙ্গে সেই হেডফোন ব্লুটুথের মাধ্যমে কানেক্ট হয়ে যায়। তখন সঞ্জয়কে একের পর এক প্রশ্ন করেন পুলিশ আধিকারিকরা। তখনই কান্নায় ভেঙে পড়ে সঞ্জয়। আগের রাতে সে যে রাস্তায় এক মহিলার শ্লীলতাহানি করেছিল তাও স্বীকার করে নেয়।