হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৫৭৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারী। তবে তাঁদের পূর্ণ বেতন দিল রাজ্য সরকার। এপ্রিল মাসের বেতন দেওয়া হল তাঁদের। মঙ্গলবার বিকেল থেকে তাঁদের বেতন দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রকাশ, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিহারানো শিক্ষকরা বেতন পেলেন।
রাজ্যের অর্থ দফতর সূত্রে খবর আগেই খবর মিলেছিল, শ্রম দফতরের আইন অনুযায়ী, শিক্ষকরা এপ্রিলের বেতন পাবে। সেই মতো কথা রাখল রাজ্য সরকার। কারণ, এপ্রিল মাসে কাজ করতে করতে শিক্ষকরা জানতে পারেন তাঁদের চাকরি যাবে। সেই মোতাবেক এই বেতন মিলল। তবে এর পরের মাস থেকে বেতন মিলবে কি না তা জানা যাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর। সুপ্রিম কোর্টে মামলা ওঠার কথা আগামী শুক্রবার। যদি সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ করে দেয়, সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা হয়তো ফের চাকরি ফিরে পেয়ে আগের মতো বেতন পেতে পারেন।
চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফেও পৃথক ভাবে মামলা করা হয়েছে। তাদের দাবি, শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। এর আগের দিনই শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জোর সওয়াল করে রাজ্য। তবে সুপ্রিম কোর্ট তাতে কর্ণপাত করেনি।
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় পর্যবেক্ষণে জানান, ওএমআর শিট সব নষ্ট হয়েছে। তাহলে কে যোগ্য আর কে অযোগ্য প্রার্থী তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে? অর্থাৎ যার ভিত্তিতে এই নিয়োগ সেই শিটই তো নেই। নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তাহলে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা কীভাবে সম্ভব। প্রধান বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, এত জনের চাকরি বাতিল এটা বড় সিদ্ধান্ত। তবে আদালতের কাছে কোনও পথ না থাকলে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। এটা বড় সিদ্ধান্ত কোনও সন্দেহ নেই। তবে কলকাতা হাইকোর্ট হয়তো পারেনি তাই অন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আসল OMR শিট নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তবে এত লোকের চাকরি গেল, তার যারা আসল সুবিধাভোগী তাদের দেখতে হবে।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'প্যানেলের বাইরে নিয়োগ করা হয়েছে। এটা তো সম্পূর্ণ জালিয়াতি।’ তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, বেআইনিভাবে নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টর রায়ের ৮ নম্বর আদেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টর রায়ে বলা হয়েছিল, সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি যাঁরা করেছিলেন, প্রয়োজনে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা যাবে। রায়ের এই অংশটির উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।