মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপোর বিয়ে নিয়ে ক্রমেই সুর চওড়া করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর বিয়ের অনুষ্ঠানকে 'স্টেট স্পনসর্ড ওয়েডিং' বলে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে আবারও নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের কণ্ঠে শোনা গেল 'চোর মমতা' শব্দবন্ধ। যা ঘিরে শাসক-বিরোধী তরজা অব্যাহত রইল বছর শেষের বঙ্গ রাজনীতিতে।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিয়ে। কার্শিয়ঙে হবে বিয়ের অনুষ্ঠান। এই মুহূর্তে পাহাড়েই রয়েছেন মমতা। তবে বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে বুধবারই জানিয়েছেন মমতা। বিয়ের পর বর-কনেকে আশীর্বাদ করার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ি কন্যাকে বাড়ির বৌমা করে আনার কথা গত মার্চ মাসে পাহাড় সফরে গিয়ে জানিয়েছিলেন মমতা। পাহাড়ের এক কন্যার সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধছেন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসক ভাইপো। এই বিয়ে ঘিরে প্রথম থেকেই সরগরম রাজনীতির ময়দান। বিয়ে নিয়ে আবার তৃণমূলনেত্রীকে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ''বিয়েবাড়িতে গিয়েছেন মমতা। ১৫৮ জন ডাক্তার, নার্সকে নিয়োগ করা হয়েছে। নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা স্টেট স্পনসর্ড ওয়েডিং।" নীল বাতি লাগানো গাড়ির সেই ভিডিয়ো বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন শুভেন্দু। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আজতক বাংলা।
এর আগেও এই বিয়ের অনুষ্ঠানের জাঁকজমক নিয়ে সরব হয়েছিলেন শুভেন্দু। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) বিরোধী দলনেতা লিখেছিলেন, ''রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর আগামী রবিবার পর্যন্ত প্রতিটি অকুস্থলে কার্শিয়ং হাসপাতালের ২৮ চিকিৎসককে, সঙ্গে প্রায় সমসংখ্যক নার্স, ফার্মাসিস্ট ও অ্যাটেন্ড্যান্টদের সকাল থেকে রাত ও রাত থেকে সকাল দুই শিফটে ডিউটিতে মোতায়েন করেছে। আরও ২৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে হাসপাতালে দুই শিফটে মজুত বাহিনী হিসেবে রাখার হুকুমনামা লটকানো হয়েছে সরকারি দেওয়ালে।''
মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে শুভেন্দু আরও বলেছেন, ''উত্তরবঙ্গে বেড়াতে যান মমতা। পাহাড়ে ১৫টি গেস্ট হাউস রয়েছে। তার চাবিগুলো ওঁর কাছেই রয়েছে।" উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলেও সরব হন শুভেন্দু। আগামী ১২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে 'উত্তর উত্তরণের খোঁজে' আলোচনাসভার কথা জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
পাশাপাশি, এদিনও মমতাকে 'চোর' বলে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। বলেছেন,''আপনি সৎ, চোর বলা যাবে না! চোর মমতা, চোর সরকার, কৃষকদের কাছ থেকে টাকা লুঠ করতে চাইছে।কৃষকদের সর্বনাশ হয়েছে।'' তিনি আরও বলেন, ''অতিবর্ষণের কারণে ধান নষ্ট হয়েছে। কৃষি দফতর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মেনে প্রচার চালায়নি। তাই রাজ্যের কৃষকরা বিপাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মমতা সরকারের উন্নাসিকতা, অবহেলা, কর্তব্যে গাফিলতির জন্য কৃষকরা বিপাকে।" এই রাজ্য়ের সরকারের দশাও রাজস্থান, ছত্তীশগড়ের মতো অবস্থা হবে বলেও কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু।